কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের আশ্রয় শিবির থেকে ১৬০০ জন রোহিঙ্গা ভাসানচরে উদ্দেশ্যে রওনা করেছেন। এর মধ্য নতুন ১২০০ জন ও ভাসানচর থেকে ক্যাম্পে বেড়াতে আসা ৪০০ জন রোহিঙ্গা রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) রাত ১১টার দিকে উখিয়া ডিগ্রি কলেজের মাঠের অস্থায়ী কেন্দ্র থেকে পুলিশ পাহারায় তারা ভাসানচরে উদ্দেশ্যে রওনা হন। তারা আগের মতো গাড়িযোগে প্রথমে চট্টগ্রাম পৌছে পরে জাহাজে ভাসানচরে রওনা করবেন বলে জানিয়েছেন ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি আমির জাফর।
তিনি জানান, বৃহস্পতিবার বিকালের দিকে আশ্রয় শিবির থেকে উখিয়া ডিগ্রি কলেজের মাঠে অস্থায়ী কেন্দ্রে আনা হয় রোহিঙ্গাদের।পরে তথ্য যাচাই-বাছাই ও স্বাস্থ্য পরীক্ষাসহ প্রয়োজনীয় কার্যক্রম শেষ করে রাত ১১টার দিকে ৩৪টি বাসগাড়ি যোগে ১৬০০ রোহিঙ্গা পুলিশি পাহারায় চট্টগ্রামের উদ্দেশ্য যাত্রা করেন। সেখান থেকে তারা নৌ-বাহিনীর জাহাজে শুক্রবার ভাসানচরে পৌঁছবেন। তাদের গাড়ি বহরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, অ্যাম্বুলেন্সসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার লোকজন রয়েছেন।
বালুখালি ক্যাম্প-১০ এর সাদেক হোসাইন বলেন, আমাদের পরিচিত রোহিঙ্গাদের মাধ্যমে শুনেছি ভাসানচরের পরিবেশ পরিস্থিতি ভালো। ঝামেলা ছাড়া বাস করা যায়। এখানে (বালুখালীতে) দিন দিন খুনের ঘটনা, অপহরণ ও মাদক ব্যবসা বাড়ছে। তাই পরিবার নিয়ে নিরাপদ থাকতে স্বেচ্ছায় ভাসানচরে যাচ্ছি। কোনদিন মিয়ানমারে নিজেদের বসত-বাড়িতে ফেরার সুযোগ হলে সেদিন ভাসানচর থেকে চলে আসবো।
অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ সামছু-দ্দৌজা বলেন, উখিয়া থেকে ছেড়ে যাওয়া রোহিঙ্গাদের বহনকারী বাসগুলো চট্টগ্রামে পৌঁছানোর পর নৌবাহিনীর জাহাজে নোয়াখালীর ভাসানচর আশ্রয়কেন্দ্রে স্থানান্তর করা হবে। এবার যাওয়া রোহিঙ্গাদের মাঝে বেশির ভাগ নারী ও শিশু। উন্নত জীবনযাপনের সব ব্যবস্থা ভাসানচরে রয়েছে।
উল্লেখ্য, উখিয়া-টেকনাফের আশ্রয় শিবিরে রোহিঙ্গাদের চাপ কমাতে নোয়াখালী ভাসানচরে ১৩ হাজার একর জায়গায় এক লাখ রোহিঙ্গা বসবাসের উপযোগী করে ১২০টি গুচ্ছ গ্রামের অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ৩ হাজার ৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়।এবং এর আগে আরো কয়েক দফায় প্রায় ৪০ হাজার রোহিঙ্গা স্বেচ্ছায় ভাসানচরে গিয়ে বর্তমানে বাস করছেন। তারা চাইলে উখিয়া-টেকনাফে থাকা স্বজন ও পরিচিতদের কাছে আসা যাওয়া করতে পারছেন।