কক্সবাজার জেলার সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু এলাকায় সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে চলা যুদ্ধ পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হচ্ছে।ওপার থেকে বোমা ও মর্টারশেলের শব্দে কাঁপছে টেকনাফের বাড়িঘর। আতঙ্কে সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা।
বৃহস্পতিবার রাত থেকে এ হামলা শুরু হয় সকাল পর্যন্ত মিয়ানমারে থেমে থেমে বোমা ও মর্টার হামলার শব্দে কাঁপছে টেকনাফ সীমান্ত এলাকা। পাশাপাশি বিমান হামলাও চালাচ্ছে সেনাবাহিনী।
এদিকে, টেকনাফ, পৌরসভা, হ্নীলা, জাদিমুড়া, দমদমিয়া, নাইট্যংপাড়া, পৌরসভার জালিয়াপাড়া, নাজিরপাড়া, সাবরাং, শাহপরীর দ্বীপ, খারাংখালী নাফ নদীর মোহনা ও নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত থেকে ভেসে আসছে বিস্ফোরণের বড় বড় শব্দ।
সীমান্তের লোকজন জানান, দীর্ঘদিন বন্ধের পরে এই প্রথম কোনো বড় ধরনের মর্টারশেল বিস্ফোরণের বিকট শব্দে কাঁপছে টেকনাফ।
রোহিঙ্গাদের থেকে জানা যায়, মিয়ানমার রাখাইন রাজ্যে মংডু শহরে আরাকান আর্মি ও সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে যুদ্ধ চলমান। যুদ্ধে মংডু শহরে অনেক রোহিঙ্গা হতাহত হচ্ছে।
এমনকি জীবন রক্ষার্থে হাজার হাজার রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশু এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।
রোহিঙ্গাদের বাড়িঘর ছেড়ে চলে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে। বর্তমানে মংডুর অধিকাংশ গ্রামে লোকজন নেই বললেই চলে।
মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা রুহুল আমিন বলেন, ‘মিয়ানমার মংডু শহরে সেনাবাহিনীর অধিকাংশ ঘাঁটি দখল করে নিয়েছে আরকান আর্মি।
মংডু শহরের হাইন্দাপাড়া সেনাবাহিনীর ঘাঁটিতে হামলা চালাচ্ছে আরাকান আর্মি। আমাদের গ্রামের আর কোনো লোকজন নেই।
বড় বড় অস্ত্র দিয়ে হামলা চালাচ্ছে, আমাদের জীবনযাপন করতে কষ্ট হচ্ছে। তাই আমার জীবন বাঁচাতে সাগর পথে বাংলাদেশে চলে এসেছি।’
হ্নীলা ওয়াব্রাং এলাকার সীমান্ত বাসিন্দা কামাল বলেন, ‘মিয়ানমারের অভ্যন্তর থেকে ১০-১৫ মিনিট পরপর মর্টারশেল বিস্ফোরণের আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে। যে কারণে আমরা আতঙ্কিত হয়ে রাত জেগেছিলাম।
এতদিন বন্ধ থাকলেও আজকে রাতে নতুন করে বেশি বিস্ফোরণ হচ্ছে। রাত ১২টার পর থেকে বজ্রপাতের মত বিকট শব্দ আর শব্দ এখনো থেমে থেমে চলছে বিকট শব্দ আর কালো ধুয়া।’
সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর হোসেন বলেন, ‘রাত থেকে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে মর্টারশেল বিস্ফোরণের ভারী আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। তবে এলাকার সীমান্তের কাছাকাছি বসবাসরত লোকজনকে আতঙ্কিত না হওয়ায় জন্য সতর্ক করা হয়েছে।’
টেকনাফ-২ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘মিয়ানমারে চলমান সংঘাতের কারণে নাফ নদ সীমান্ত দিয়ে যাতে নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করতে না পারে সেজন্য সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বিজিবি। সীমান্তে যেকোনো ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে আমরা প্রস্তুত।