ঢাকা: মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর আমির, সাবেক কৃষি ও শিল্পমন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামীর মৃত্যুদণ্ডের রায় কার্যকর করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার রাতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নিজামীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। এর আগে রাত ৮ টার দিকে মতিউর রহমান নিজামীর পরিবারের সদস্যরা কারাগারে এসে তার সঙ্গে শেষ বারের মতো দেখা করে গেছেন।
এর আগে রিভিউ আবেদন খারিজ করে মৃত্যুদণ্ড বহালের রায়ের পর নিজামীর আইনজীবী ও পরিবারের সদস্যরা কাশিমপুর কারাগারে দেখা করতে গেলে তিনি তাদের কাছে ওই সময়ই বলেছিলেন, আল্লাহ ছাড়া তিনি কারো কাছে ক্ষমা চাইবেন না।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে নিজামী ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে প্রাণভিক্ষা চাইবেন না বলে জানিয়েছেন। এরপরই সরকারের পক্ষ থেকে রায় কার্যকরের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেয়া হয়।
২০১০ সালের ২৯ জুন ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে করা একটি মামলায় মতিউর রহমান নিজামীকে জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা গ্রেফতার করে।
পরবর্তীতে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতবিরোধী অপরাধের মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ২০১৪ সালের ২৯ অক্টোবর মতিউর রহমান নিজামীকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
ওই বছর ২৩ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল আবেদন করেন মাওলানা নিজামী।
২০১৬ সালের ৬ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ নিজামীর মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখে রায় দেন। আপিল বিভাগের রায়ে মৃত্যুদণ্ডের তিনটি ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের দুটি দণ্ডাদেশ বহাল রাখা হয়।
গত ১৫ মার্চ নিজামীর আপিলের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
এর পর গত ২৯ মার্চ মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন দায়ের করেন। ৭০ পৃষ্ঠার রিভিউ আবেদনে মোট ৪৬টি (গ্রাউন্ডে) যুক্তি দেখিয়ে মৃত্যুদণ্ড বাতিল করে খালাস প্রদান এবং অভিযোগ থেকে অব্যাহতির আরজি জানানো হয়।
গত ৫ মে নিজামীর রিভিউ আবেদন খারিজ করে মৃত্যুদ-বহাল রাখেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ।
৯ মে সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টায় সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ রিভিউ আবেদন খারিজ করে দেওয়া পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন। এরপর বিকেল ৫টার কিছু পর আপিল বিভাগের একটি প্রতিনিধিদল রায়ের কপি ট্রাইব্যুনালে পৌঁছে দেন।
এরপর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে চার সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল সন্ধ্যা ৭টা পাঁচ মিনিটে রায়ের কপি নিয়ে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে যান। জ্যেষ্ঠ জেল সুপার জাহাঙ্গীর কবীর রায়ের কপি গ্রহণ করেন। পরে রাতেই নিজামীকে রিভিউ খারিজ করে দেওয়া পূর্ণাঙ্গ পড়ে শোনান। আজ মঙ্গলবার রাতে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। –
পাঠকের মতামত