বাংলামেইল : আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের দ্বিতীয় বছরে এসে তৃতীয় দফায় সম্প্রসারণ করা হচ্ছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভার। এই যাত্রায় মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভূক্ত হচ্ছেন চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র ও নগর অাওয়ামী লীগের সভাপতি এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী।
পাশাপাশি আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনিও মন্ত্রিসভায় যুক্ত হবেন। এছাড়া সাবেক পরিবেশ মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক খাদ্য মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাকের নামও শোনা যাচ্ছে।
আগামী সপ্তাহের শুরুতেই মন্ত্রিসভার এই সম্প্রসারণ কাজ শুরু হবে। এ বিষয়ে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে শেখ হাসিনার মন্ত্রিপরিষদে কোনো পরিবর্তন আসছে কি না সে ব্যাপারে নিশ্চিত করে কিছু জানা যাচ্ছে না।
সচিবালয়ের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র ও মহিউদ্দিন চৌধুরী ঘনিষ্ট সূত্র বাংলামেইলকে বিষয়টি নিশ্চিত করলেও কেউই এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।
বলা হচ্ছে, গত মেয়র নির্বাচনে নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিনকে দলের মনোনয়ন ছেড়ে দেয়ার দিয়ে শারীরিক অসুস্থার মধ্যেও দলীয় কার্যক্রমে অংশ নেয়ায় দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মহিউদ্দিন চৌধুরীর ওপর সন্তুষ্ট। এছাড়া চট্টগ্রামে তার অতীত রাজনীতি এবং ত্যাগের বিষয়টিও বিবেচনায় রাখা হচ্ছে।
জানতে চাইলে এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী বুধবার রাতে বাংলামেইলকে বলেন, ‘আই ডোন্ট নো। সেটি আপনারা এবং প্রধানমন্ত্রীই ভালো বলতে পারবেন। আমার কোনও চাকরি নেই। আমি বুড়ো হয়ে গেছি। এখন শুধু দলের জন্য কাজ করি। নেত্রী কী সিদ্ধান্ত নেন সেটি উনার বিষয়। তবে মন্ত্রী হচ্ছি কি হচ্ছি না সেটি আমার জানা নেই।’
তবে তার ঘনিষ্ট দুইজন নেতার সঙ্গে আলাপকালেও মহিউদ্দিনের মন্ত্রী হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। ১৯৪৪ সালের ১ ডিসেম্বর রাউজানের গহিরায় মরহুম হোসেন আহমেদ চৌধুরী ও মরহুমা বেধুরা বেগমের ঘর আলোকিত করে জন্ম নেন চট্টলার অবিসংবাদিত নেতা মহিউদ্দিন চৌধুরী। চার ভাইয়ের মধ্যে মহিউদ্দিনের অবস্থান দ্বিতীয়।
মহিউদ্দিন ছাত্রজীবন থেকেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। পরবর্তীতে শ্রমিক লীগের রাজনীতি করে এক পর্যায়ে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের কান্ডারি হন মহিউদ্দিন। মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিনের মুক্তিযুদ্ধকালে রয়েছে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অটল থাকতে গিয়ে সামরিক শাসনসহ বিভিন্ন সময় তাকে কারাবরণ করতে হয়েছে।
স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন, চট্টগ্রাম বন্দর রক্ষা আন্দোলন, অসহযোগ আন্দোলনে চট্টগ্রামে নেতৃত্ব দেয়া মহিউদ্দিন এখনও সক্রিয় আছেন রাজপথে। জামায়াত ইসলামী হরতাল ডাকলে এখনও মহিউদ্দিন নিজের অনুসারী নেতাকর্মীদের নিয়ে নগরীতে হরতাল প্রতিরোধে নেমে যান। চট্টগ্রামের গণমানুষের এই নেতা টানা ১৭ বছর চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের দায়িত্ব পালন করছেন।
অপরদিকে ডা. দীপু মনি আওয়ামী লীগের প্রথম মেয়াদে পররাষ্ট্র মন্ত্রী ছিলেন। সেসময় তার দক্ষতা ও বেশি বেশি বিদেশ সফর নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ন উঠেছিল। তবে খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রীর দায়িত্বপালনকারী ড. আব্দুর রাজ্জাক দ্বিতীয় মেয়াদের মন্ত্রিসভায় জায়গা না পাওয়ায় অনেকে অবাক হয়েছিলেন।
২০১৫ সালের ১৫ জুলাই নগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি নুরুল ইসলাম বিএসসিকে টেকনোক্র্যাট কোটায় প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তার সাথে প্রতিমন্ত্রী দুই জনকে পূর্ণ মন্ত্রী আর তারানা হালিমসহ মোট দুজনকে প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছিল।