পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করা হয়েছে, ‘আল্লাহর সত্তা ব্যতীত সব কিছুই মরণশীল। কোনো জীবের পক্ষে মৃত্যুকে এড়ানো অসম্ভব। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার অনুসারীদের মৃত্যুর কথা বেশি বেশি স্মরণ করা এবং মৃত্যুর জন্য প্রস্তুতি গ্রহণের তাগিদ দিয়েছেন।
হজরত আবদুল্লাহর ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি বলল হে আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকদের মধ্যে অধিক বুদ্ধিমান, জ্ঞানী ও সতর্ক ব্যক্তিকে? উত্তরে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, লোকদের মধ্যে যারা মৃত্যুকে সবচেয়ে বেশি স্মরণ করে এবং তার জন্য যে সবচেয়ে বেশি প্রস্তুতি গ্রহণ করে সেই হচ্ছে প্রকৃত বুদ্ধিমান ও হুঁশিয়ার লোক। তারাই দুনিয়ার সম্মান ও পরকালের মর্যাদা উভয়ই লাভ করতে পারে। (তিবরানি ও মুজামুস-সগির)
মানুষের মৃত্যু-পরবর্তী জীবন হলো অনন্ত জীবন। দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ী জীবনের ভিত্তিতে পরকালের জীবনে কে জান্নাতে থাকবে আর কে জাহান্নামে থাকবে তা নির্ধারিত হবে। কিয়ামতের কঠিন দিনে প্রতিটি মানুষকে জবাবদিহিতার সম্মুখীন হতে হবে।
হজরত ইবনে মাসউদ (রা.) রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে বর্ণনা করেন। তিনি বলেছেন, (কিয়ামতের দিন) মানুষের পা একবিন্দু নড়তে পারবে না যতক্ষণ পর্যন্ত তার কাছে এই পাঁচটি বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা না হবে। ১. নিজের জীবনকাল সে কোন কাজে অতিবাহিত করেছে? ২. যৌবনের শক্তি সামর্থ্য কোথায় ব্যয় করেছে? ৩. ধন-সম্পদ কোথা থেকে উপার্জন করেছে? ৪. কোথায় তা ব্যয় করেছে? এবং ৫. সে (দীনের) যতটুকু জ্ঞানার্জন করেছে সে অনুযায়ী কতটুকু আমল করেছে? (তিরমিযি)
কিয়ামতের দিনের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনেকগুলো হাদিসে।
হজরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি যে, কিয়ামতের দিন মানবজাতিকে খালি, উলঙ্গ ও খত্নাবিহীন অবস্থায় একত্রিত করা হবে। আমি আরজ করলাম, হে আল্লাহর রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমতাবস্থায় তো নারী-পুরুষ পরস্পরের দিকে তাকাবে! নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে আয়েশা! সে দিনের অবস্থা এত ভয়াবহ হবে যে, (নারী-পুরুষ) একে অপরের দিকে তাকানোর কোনো চিন্তাই করবে না। (বুখারি মুসলিম ও মিশকাত)
লেখক : ইসলামী গবেষক।
পাঠকের মতামত