এ.এম হোবাইব সজীব,মাতারবাড়ী থেকে ফিরে:
কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার উপদ্বীপ মাতারবাড়ী ৪ শিক্ষা প্রতিষ্টানে সরকার ঘোষিত উপবৃত্তি টাকা প্রদানে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষকদের বিরুদ্ধে। তৎমধ্যে মাতারবাড়ী উত্তর রাজঘাট, দক্ষিণ রাজঘাট, পুরান বাজার, সাইরডেইল, নতুনবাজার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ৫টি বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা যথারীতির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মাঝে উপবৃত্তির টাকা বন্টন করতে সক্ষম হলেও মাতারবাড়ী দক্ষিণ সাইর ডেইল, সিকদার পাড়া, মগডেইল ও নয়াপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে টাকা বিতরণ নিয়ে অভিভাবক প্রতিনিধি ও পরিচালনা কমিটির সদস্যদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
এ ব্যাপারে সম্প্রতি বিভিন্ন অনলাইন গণমাধ্যমে তথ্য বহুল সংবাদ প্রকাশিত হলেও আমলে নেয়নি সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। জেলা-উপজেলার উপবৃত্তির মনিটরিং টিম তদন্ত না করার কারণে ভেস্তে যাচ্ছে মাতারবাড়ী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নায্য অধিকার উপবৃত্তির টাকা বিতরণে অনিয়মের ঘটনাটি। অপরদিকে এসব শিক্ষা প্রতিষ্টানের গুণধর প্রধান শিক্ষকদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের প্রতি শাস্তি মূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী জানিয়েছেন সচেতন এলাকাবাসী
জানা গেছে, জেলা শিক্ষা অফিসের মনিটরিং অফিসার ( উপবৃত্তি) সরেজমিন মাতারবাড়ী ইউনিয়নের অভিযুক্ত ৪ বিদ্যালয়ে সঠিক তদন্ত করলে উপবৃত্তির টাকা প্রদানের অনিয়মের বিষয়টি খোলাসা হবে বলে অভিমত অভিবাক ও শিক্ষার্থীদের। অপরদিকে একটি অদৃশ্য শক্তির হস্তেক্ষেপে মাতারবাড়ী দক্ষিণ সাইর ডেইল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গুণধর প্রধান শিক্ষক আবদুল মোনাফ, মগডেইল সঃ প্রাঃ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আবুল হোছাইন, সিকদার পাড়া সঃ প্রাঃ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ হেফাজ উদ্দিনসহ নয়াপাড়া সঃ প্রাঃ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুবিনুল ইসলাম নিজেকে রক্ষা করার জন্য মোটা অংকের অর্থের মিশনে বিভিন্ন সংবাদকর্মী ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে ম্যানেজ করার জন্য তদবীর করায় তারা রক্ষা পেতে চলেছেন বলেও এমন কথার উদয় হচ্ছে সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসীর মাঝে।
জানা গেছে, মাতারবাড়ী ৪ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গত নভেম্বার ও ডিসেম্বার ২০১৫ দুই মাসের শেষ দুই কিস্তির টাকা আত্মসাত করা হয়েছে বলে শিক্ষার্থীও অভিবাবকদের অভিযোগ। এদিকে জেলা-উপজেলা শিক্ষা অফিসের পরির্দশন টিম উল্লোখিত দুই মাসের উপবৃত্তি টাকা বিতরণ হয়েছে কিনা সঠিক তদন্ত করলে থলের বিড়াল বেরিয়ে আসতে পারে বলেও অভিমত শিক্ষার্থী ও অভিবাবকদের।
মাতারবাড়ী দক্ষিণ রাজঘাট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য হোছাইন মাসুম বলেন, অন্যন্যা স্কুলে উপবৃত্তির টাকা বিতরণে দুনীর্তি হয়েছে কিনা জানি না। তবে দক্ষিণ রাজঘাট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের উপবৃত্তির নায্যা টাকা পেয়েছে আমরা তদন্ত করে দেখেছি।
৩০ জুলাই শনিবার মাতারবাড়ী সরেজমিন গিয়ে উত্তর রাজঘাট, দক্ষিণ রাজঘাট, সাইরডেইল, পুরান বাজারসহ নতুনবাজার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কার্ড ও বিভিন্ন আনুসাঙ্গিক কাগজপত্র দেখে জানা যায়, শিক্ষার্থীদের মাঝে টাকা বিতরণে কোন ধরনের অনিয়ম পরিলক্ষিত হয়নি। সাফ কথা হল দক্ষিন রাজঘাট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও উল্লোখিত ৫টি প্রতিষ্টানে সুষ্টভাবে টাকা বিতরণ হলে ও বাকী ৪টি প্রতিষ্টানে টাকা বিতরণে বিভিন্ন অনিয়ম দেখা গেছে। দক্ষিণ রাজঘাট সঃ প্রাঃ বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণীর ছাত্রী শাকিলা আকতার ও ৫ম শ্রেণীর ছাত্রী রেশমা আকতার সাথে উপবৃত্তির প্রদানে অনিয়ম হয়েছে কিনা সরাসরি জানতে চাইলে তারা বলেন, তারা তাদের নায্যা অধিকার উপবৃত্তির টাকা সুষ্টভাবে পেয়েছে। এবং অনিয়মের কোন প্রশ্ন উঠে না বলেও জানান এ দুই শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা বন্টন করে দাওয়ায় অভিবাবক মহল দক্ষিণ রাজঘাট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গুণধর প্রধান শিক্ষক মোঃ ওসমানর ভূঁইষী প্রশংসা করেছেন।
এসব বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে, দক্ষিণ রাজঘাট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ ওসমান বলেন, সুষ্টভাবে শিক্ষার্থীদের নায্যা অধিকার উপবৃত্তির টাকা তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আগামীতে এধারা অব্যাহত থাকবে। পুরান বাজার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ জসিম উদ্দিন বলেন, এখানে ব্যাংক কর্মকর্তার উপস্থিতিতে উপবৃত্তির টাকা বিতরণ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য গত ২৫ জুলাই মাতারবাড়ী ৯টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীকে উপবৃত্তির টাকা প্রদান করা হয়। এসময় তাদের অভিভাবকদের কাছ থেকে চাপ প্রয়োগ করে উপবৃত্তির ২৫শতাংশ টাকা নয়ছয় করে পকেস্থ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে বিদ্যালয়ের ৪ জন প্রধান শিক্ষকদের বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে অভিবাবক মহল ফুঁসে উঠে যোগোযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে দুনীর্তি পরায়ণ প্রধান শিক্ষকদের শাস্তি দাবী করে লিখনির মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করায় যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আলোচনার ঝড় উঠে।
মাতারবাড়ী দক্ষিণ সাইরডেইল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর অভিভাবক করিম ক্ষোভ প্রকাশ করে ফেসবুকে লিখেছেনও প্রতিবেদককে বলেন আমার ভাতিজা সংজ্ঞত কারনে নাম প্রকাশ করা গেল না উপবৃত্তির টাকা ৫’শ টাকা পেয়েছে বাকি গেল কই। অভিবাবক মহল অনেকের অভিযোগ যোগাযোগ ব্যবস্থা নাজুক হওয়ায় সবচেয়ে বেশি উপবৃত্তির টাকা আত্মসাত করেছে দক্ষিণ সাইরডেইল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল মোনাফ। তবে এসব অভিযোগ সরাসরি অস্বিকার করেন প্রধান শিক্ষক আবদুল মোনাফ।
মহেশখালী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আশীষ শিরান বলেন, উপবৃত্তির টাকা আত্মসাত করলে অভিযোগ পাওয়া গেলে দুনীর্তিপরায়ন শিক্ষকের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই বিষয়ে মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবুল কালাম বলেন, ঘটনা যদি সত্য হয় কেউ লিখিত অভিযোগ করলে সংশ্লিষ্ট আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।