প্রকাশিত: ২২/০৬/২০১৬ ৮:১৬ এএম
প্রতীকী ছবি

manobসরওয়ার আলম শাহীন,উখিয়া নিউজ ডটকম::

উখিয়া উপজেলার কুতুপালং সরকারি বনভূমি দখল করে বসবাসরত অবৈধ রোহিঙ্গা বস্তি ও তৎসংলগ্ন এলাকায় প্রতিষ্ঠিত রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প মালয়েশিয়ায় মানব পাচারের টার্নিং পয়েন্টে হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে স্থায়ীভাবে বসবাসরত ৫ জন প্রভাবশালী রোহিঙ্গা সহ কুতুপালং নিবন্ধিত শরণার্থী ক্যাম্পের ১৫ জন রোহিঙ্গা দালাল মানব পাচার নিয়ন্ত্রণ করায় সাগর পথে মানব পাচার ঠেকানো যাচ্ছে না।  কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থী অধ্যুষিত এলাকা ঘুরে ভুক্তভোগী কয়েকজন রোহিঙ্গার কাছে জানতে চাওয়া হলে এসব তথ্য উঠে আসে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এনজিও সংস্থার নেতৃবৃন্দরা দাবী করছেন, রোহিঙ্গা মানব পাচারকারী চক্রের মালয়েশিয়া ভিত্তিক একটি দালাল চক্রের সাথে কুতুপালং ক্যাম্পের কতিপয় দালাল চক্রের শক্তিশালী নেটওয়ার্ক থাকার কারণে সাগরপথে মানব পাচার অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক রোহিঙ্গা নাগরিক জানায়, ১৯৯১ সালে মিয়ানমার থেকে এসে কুতুপালং শরণার্থী ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়ে ২০০৪ সালের দিকে সাগরপথে মালয়েশিয়ায় গিয়ে সেখানে প্রভাব প্রতিপত্তির মাধ্যমে বসবাস করা রোহিঙ্গা হাশেম উল্লাহ, মাষ্টার কবির, মাষ্টার হাশিম ও মাষ্টার সাবের সহ ৫ জন রোহিঙ্গা নাগরিক বর্তমানে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে স্থায়ীভাবে স্বপরিবারে বসবাস করছে। তারা সাগর পাড়ি দিয়ে মালয়েশিয়া যাওয়া রোহিঙ্গাদের পরিচয় সনাক্ত করে তাদের নিয়ন্ত্রণে আশ্রয় পশ্রয় দিয়ে বিভিন্ন কাজ কর্মে পুনর্বাসন করছে। কুতুপালং এর সাবেক ইউ,পি, সদস্য  আওয়ামীলীগ নেতা বখতেয়ার আহমদ জানান, মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে অবস্থানরত ৫ জন প্রভাবশালী মানব পাচারকারী রোহিঙ্গার প্রতিনিধিত্ব করছেন কুতুপালং শরণার্থী রেজিষ্টার্ড ক্যাম্পের রোহিঙ্গা নাগরিক যথাক্রমে কেফায়েত উল্লাহ (৩০), পিতা: রশিদ আহমদ প্রকাশ এমপি রশিদ, সাইদুল হক (২১) পিতা: আইয়ুব আলী মাঝি, ব্লক নং- সি, নুর বেগম (৪০) প্রকাশ- খুইল্যা বুবু, স্বামী: এহছেন উল্লাহ, ব্লক নং- ডি, আরেফা বেগম (৪০) পিতা: মৌলভী গফফার, ব্লক নং- সি, নুর মোহাম্মদ (২২), পিতা সোনা আলী, ব্লক নং- ডি,  জকির আহমদ (৪২) পিতা: মোহাম্মদ বসু, সেট নং- ০৬, এমআরসি নং- ৪৭৭২৫, ব্লক নং- এফ সহ ১৫ জনের একটি প্রভাবশালী মানব পাচারকারী সিন্ডিকেট।

আমেরিকা ভিত্তিক এনজিও সংস্থা রিলিপ ইন্টারন্যাশনালের অর্থায়নে পরিচালিত এনজিও সংস্থা হেলপ কক্সবাজারের নির্বাহী পরিচালক আবুল কাশেম এমএ সাংবাদিকদের জানান, এসব মানবপাচারকারী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে রোহিঙ্গারা সাগরপথে মালয়েশিয়া গিয়ে সেখানে নিরাপদে বসবাস করার সুযোগ পেয়ে যাওয়ার খবরে মিয়ানমারে বসবাসরত রোহিঙ্গারা মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে প্রতিনিয়ত সীমান্তের নাফ নদী পাড় হয়ে শত শত রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করছে। অনুপ্রবেশকারী এসব রোহিঙ্গারা কুতুপালং রোহিঙ্গা বস্তি ও রেজিষ্টার্ড রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়ে ওই সব দালালের মাধ্যমে সাগরপথে পাড়ি জমাচ্ছে। রোহিঙ্গারা নিরাপদে মালয়েশিয়া পৌছে যাওয়ার খবরে স্থানীয় গ্রামবাসীও ওই সব দালাল চক্রের ফাঁদে পড়ে সাগর পথে অনিশ্চিত যাত্রা করছে। এভাবেই রোহিঙ্গা ও স্থানীয় গ্রামবাসী যৌথভাবে পাচার হয়ে যাওয়ার ফলে বিদেশে দেশের ভাবমূর্তি নিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা নুরুল হক খান অভিযোগ করে জানান, প্রভাবশালী এসব রোহিঙ্গা মানব পাচারকারীর প্রলোভনে পড়ে স্থানীয় অনেক যুবক নিখোজ হয়েও তাদের আইনের আওতায় আনা হয়নি। উখিয়া থানার অফিসার হাবিবুর রহমান জানান, পুলিশ রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও রোহিঙ্গা বস্তিতে নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে। তাছাড়া বিভিন্ন স্থানে সভা সমাবেশ করে মানব পাচার প্রতিরোধে উদ্ভুদ্ধ করছে। তিনি এও বলেন, তালিকাভুক্ত তিন শতাধিক মানব পাচারকারীকে আইনের আওতায় আনতে পুলিশ কাজ করছে।

পাঠকের মতামত

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে ট্রাকের ধাক্কায় নিহত ১

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের সাতকানিয়ার ঠাকুরদিঘি এলাকায় লবণবাহী ট্রাকের ধাক্কায় এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। নিহতের নাম ...

জাসদ কার্যালয়ের জায়গায় ‘শহীদ আবু সাঈদ জামে মসজিদ’ নির্মাণের ঘোষণা

বগুড়া শহরের জিরো পয়েন্ট সাতমাথা সংলগ্ন এলাকায় বৃহস্পতিবার রাতে ভেঙ্গে ফেলা জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ-ইনু) ...

বাড়ছে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ, আটক ৩৩

বান্দরবানের আলীকদম সীমান্তে বাড়ছে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের সংখ্যা। আজও বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকালে শিশুসহ ৩৩ মিয়ানমারের নাগরিককে আটক ...