বেলাল আজাদ::
আমাদের দেশে প্রায় প্রতিদিনই থানায় ও আদালতে অহরহ মামলা- মোকদ্দমা দায়ের হচ্ছে। এসব মামলা-মোকদ্দমায় জড়িয়ে পড়ছেন অগণিত মানুষ। বছরের পর বছর ঘুরছেন থানা-কোর্টে। অর্থ ও সময় অপচয় ছাড়াও নিঃস্ব- হয়রানী হতে হচ্ছে বহু মানুষকে। কেউ প্রতিকার বা ন্যায় বিচারের আশায় মামলা- মোকদ্দমা দায়ের করছেন, আবার কেউ সামাজিক বা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে পড়ছেন। আর বিভিন্ন অপরাধ করেও আসামী হচ্ছে অনেক অপরাধী। মামলা-মোকদ্দমায় বাদী বা বিবাদী হয়ে লাভবান হয়েছেন, এমন মানুষ কমই খুঁজে পাওয়া যাবে। একটা সামান্য বিরোধের বিচার নিষ্পত্তিতে আইন- আদালতে বছরের পর বছর সময়ক্ষেপন, লক্ষ লক্ষ অর্থ ব্যয় করে বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে ফলাফলটা হয় শূন্য! সামান্য বিরোধে জেদের মাথায় অনেকে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করেন, যা স্থানীয় সালিশ- বিচারে নিষ্পত্তি করা যেত। আবার প্রতিপক্ষ বিচার না মানায় আসামী বা বিবাদী হচ্ছেন অনেকে। থানা বা আদালতে মামলা করতে, জামিন নিতে অথবা যে কোন তদবীর করতে বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে এক শ্রেণীর দালাল বা রাজনৈতিক নেতা কিংবা জনপ্রতিনিধি, পুলিশ-দারোগা, পিপি-এপিপি, উকিল-মূহুরী, আদালতের বেঞ্চ সহকারী (পেশকার), সেরেস্তাদার, ষ্টেনোগ্রাফার, সিএসআই, জিআরও, এফসিসিও, জারীকারক ও পিয়ন সহ সংশ্লিষ্টদের কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা দিতে হয়। তারিখের পর তারিখ সময়ক্ষেপন, অর্থ ব্যয় ছাড়া ভাল ফল ক’জনেই বা পায় ? প্রায় দু’শ বছরের পূরনো, রাষ্ট্রীয় ও রাজনৈতিক প্রভাবে প্রলুব্দ এবং ব্যয়বহুল বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থায় সহসা প্রতিকারের আশা করাই অবান্তর। তাই যে কোন বিরোধে মামলা- মোকদ্দমায় না জড়িয়ে স্থানীয় ভাবে অথবা নিজেদের মধ্যে সমাধান করে নেওয়া উচিত॥
বেলাল আজাদঃ ফ্রি-ল্যান্স সংবাদকর্মী ও প্রধান সম্পাদক, বাংলাদেশের আইন কানুন।
পাঠকের মতামত