বর্তমান সময়ের আলোচিত বক্তা মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারীর চলতি বছর মার্চ পর্যন্ত সব ওয়াজ ও তাফসির মাহফিল স্থগিত করা হয়েছে। এই সময়টাতে তিনি মালয়েশিয়ায় অবস্থান করবেন এবং সেখানে গবেষণা কাজে ব্যস্ত থাকবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
সেখানে মালয়েশিয়া প্রবাসী কমিউনিটির উদ্যোগে আয়োজিত মাহফিলে প্রধান বক্তা হিসেবে আলোচনা করবেন।
আগামী ৮ই মার্চ রোববার কুয়ালালামপুরে সন্ধ্যায় হোটেল ডি পালমায় (বলরুম) মাহফিলে আরও আলোচক হিসেবে থাকবেন কুয়ালালামপুর বাংলা মার্কেট মসজিদের সাবেক খতিব হযরত মাওলানা মহিউদ্দিন সাহেব।
ব্যবসায়ী ও কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকবেন- ইঞ্জিনিয়ার বাদলুর রহমান খান, এম জে আলম, জুবায়ের আহমেদ জসীম, মোহাম্মদ রবিউল ফারাজী।
গত বৃহস্পতিবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক স্ট্যাটাসে তিনি এ তথ্য জানিয়েছেন। খুব অল্প সময়ে বাংলাদেশে ইসলামী জালসা করে জনপ্রিয়তার শীর্ষে ওঠেন মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী। তার আলোচনায় লাখ লাখ মুসল্লির সমাগম হতে থাকে। তবে, তাকে নিয়ে একটি মহল সমালোচনাও করতে থাকেন। তার মাহফিলে বাধা আসতে থাকে বিভিন্ন মহল থেকে। তিনি ঠিক কি কারণে দেশ ছেড়ে যাচ্ছেন তা স্পষ্ট করে না বললেও তার দেয়া ফেসবুক স্ট্যাটাসে সাম্প্রতিক সময়ের চিত্রগুলোই উঠে এসেছে। মিজানুর রহমান আজহারীর
ফেসবুক স্ট্যাটাসে বলেন, ‘...পারিপার্শ্বিক কিছু কারণে, এখানেই এ বছরের তাফসির প্রোগ্রামের ইতি টানতে হচ্ছে। তাই, মার্চ পর্যন্ত আমার বাকী প্রোগ্রামগুলো স্থগিত করা হল। রিসার্চের কাজে আবারো মালয়েশিয়া ফিরে যাচ্ছি। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন সুযোগ করে দিলে, আবারো দেখা হবে ও কথা হবে কুরআনের মাহফিলে ইনশাআল্লাহ।’
স্ট্যাটাসে মাওলানা আজহারী বলেন, ‘এ বছর বেশীরভাগ প্রোগ্রামেই পারিবারিক ও সামাজিক ক্রাইসিস নিয়ে কথা বলেছি, পাশাপাশি কয়েকটি সূরার তাফসিরও করেছি। আশা করি, আলোচনাগুলো থেকে আপনারা উপকৃত হবেন। পরিবারের সবাই মিলে আলোচনাগুলো শুনুন এবং কথাগুলো বাস্তব জীবনে মেনে চলার চেষ্টা করুন। তাহলে দেখবেন ধীরে ধীরে, আমাদের পরিবার ও সমাজ সুখময় এবং শান্তিময় হয়ে উঠবে ইনশাআল্লাহ।’
তিনি বলেন, ‘আমি একজন নগন্য মানুষ। মহাগ্রন্থ আল কুরআনের ছাত্র। কুরআনের ছাত্র হয়েই বেঁচে থাকতে চাই ও নিরলস কাজ করে যেতে চাই। তাই সুপ্রিয় শ্রোতাদেরকে বলব, প্লিজ আমাকে নিয়ে অতিরিক্ত মাতামাতি করবেন না। আমাকে জড়িয়ে কোনো ব্যাপারে কাউকে গালাগালি করবেন না, অন্য কোনো মতাদর্শের আলেমদেরকে হেয় বা ছোট করে কিছু বলতে যাবেন না। যদিও তাদের কেউ কেউ কখনো আমাকে ছোট করে কথা বলে। অনুরূপভাবে, কোথাও আমাকে ডিফেন্ড করে তর্ক বা কমেন্ট করতে চাইলে, ভদ্রতা বজায় রেখে, যৌক্তিকভাবে এবং বিনয়ের সাথে সেটা করুন। সত্য একদিন উন্মোচিত হবেই হবে ইনশাআল্লাহ। দেশের আলোচিত এই তরুণ ইসলামী বক্তা বলেন, আল্লাহ তায়ালার অশেষ মেহেরবানিতে, দেশের আপামর জনতার যে ভালোবাসা পেয়েছি, জানি না সিজদায় পড়ে কতটুকু অশ্রু ঝরালে এবং কোন ভাষায় শোকরগোজার হলে এর যথাযথ শুকরিয়া আদায় হবে। মালিকের দরবারে আলীশানে লাখো কোটি শুকর এবং সুজুদ। ওয়ালহামদু লিল্লাহি ‘আলান্নি’আম। প্রেগ্রামগুলো বাস্তবায়নে যারা সার্বিক সহযোগিতা করেছেন, তাদের সবার জন্য রইল আন্তরিক ভালোবাসা ও দোয়া। বিশেষ করে পুলিশ, প্রশাসন এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় প্রোগ্রামগুলো সুন্দরভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে। তাদেরকে আল্লাহ তায়ালা উত্তম প্রতিদান দান করুক।
খুবই অল্প সময়ে জনপ্রিয়তা অর্জনকারী এই ইসলামী বক্তা বলেন, আমার এ জীবনের ছোট্ট অভিজ্ঞতায় যা দেখলাম, সেটা হল: আমরা আমাদের জীবনের একটা উল্লেখযোগ্য সময় কাটিয়ে দেই অন্যকে হিংসা করতে করতে। নিজেরা কাজ না করে অন্যের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাতে আমরা মহাব্যস্ত। আসলে, অপপ্রচার করে তেমন কোনো লাভ নেই। অপপ্রচারে আমি কখনো মন:ক্ষুন্ন হই না। আমার বিশ্বাস আপনারাও হবেন না। কারণ অপপ্রচারগুলোই আমাদের প্রচারণার দায়িত্ব পালন করেছে আলহামদুলিল্লাহ।
হক্বের পথে বাঁধা, বিপত্তি আসবেই। এটাই স্বাভাবিক। যে পথে কাঁটা নেই সেটা পথ নয়, সেটা কার্পেট। আর কার্পেটে হেটে মজলিশে পৌঁছানো যায়, মনজিলে নয়। মন্তব্য কখনো গন্তব্য ঠেকাতে পারে না। তাওয়াক্কালতু ‘আলাল্লাহ...।’