কক্সবাজারের টেকনাফে সাগরপথে মালয়েশিয়া যাওয়ার প্রস্তুতিকালে দালালসহ ২৩ জন রোহিঙ্গা নারী পুরুষকে আটক করেছে থানা পুলিশ।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) সোয়া ১২টায় টেকনাফ টেকনাফ সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ লম্বরী মেরিন ড্রাইভ সড়ক সংলগ্ন একটি বাড়ি থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়। তাদের অধিকাংশই পুরুষ বাংলাদেশী। রোহিঙ্গারা উখিয়া কতু পালং ক্যাম্পের বাসিন্দা। উদ্ধার হওয়া মালয়েশিয়াগামীর মধ্যে ৮জন বাংলাদেশি।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন। তিনি জানান, বুধবার দিবাগত রাতে মানবপাচারকারী একটি চক্র টেকনাফ সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ লম্বরী এলাকায় রোহিঙ্গাদের মালয়েশিয়া পাচারের উদ্দেশ্যে জমায়েত করে। এ খবর পেয়ে পুলিশ অভিযান চালায়। অভিযানে দক্ষিণ লম্বরী এলাকায় একটি বাড়ি থেকে তিন দালালসহ ২৩ মালয়েশিয়াগী যাত্রীকে আটক করা হয়। এর মধ্যে ১৭ জন পুরুষ, ৫ জন নারী ও ১ শিশু রয়েছে। পুলিশ সুপারের নির্দেশনা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ধৃত তিন দালাল হলেন, লোনা বেগম (৩৫) টেকনাফের সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ লম্বরীর বাসিন্দা। বাকি দুজন , সাবরাং নয়া পাড়ার বাসিন্দা মোঃ আব্দুল্লাহ (৩০), আরেকজন শাহপরীরদ্বীপ মগ পুরার বাসিন্দা রিদুয়ান( ২৮)।
উদ্ধার হওয়া মালয়েশিয়াগামী রোহিঙ্গা নারী উম্মে হাবিবা বলেন, ৪ লাখ ৪০ হাজার টাকা কন্ট্রাক্টে আমার ছোট বোনকে নিয়ে সাগরপথে মালয়েশিয়ার উদ্দেশে ক্যাম্প ত্যাগ করি। এজন্য দালালকে ১লাখ ৪০ হাজার টাকা দিয়েছি। বাকি ৩ লাখ টাকা মালেয়শিয়া পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দালালরা টেকনাফের একটি বাড়িতে ২দিন আটকে রাখে। অবশেষে যাত্রার প্রস্তুতিকালে পুলিশের কাছে ধরা পড়েছি। তিনি আরও বলেন, অনেক বাড়িতে এবং পাহাড়ে আরও রোহিঙ্গা আটক রয়েছে।
উদ্ধার হওয়া রোহিঙ্গারা জানিয়েছে, উখিয়া কুতুপালং রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের এক দালালের মাধ্যমে ৪ লাখ টাকার বিনিময়ে তাদের মালয়েশিয়া যাওয়ার কথা ছিল। পুলিশের জালে আটক হওয়ার পর আর যাওয়া হয়নি।
নুর কায়াস নামের এক রোহিঙ্গা তরুণী বলেন, আমার বোন মালয়েশিয়া থাকে। মালয়েশিয়ায় আমার বিয়ে ঠিকঠাক হয়েছে। তাই বিয়ে করতেই তিনি মালয়েশিয়ায় যাচ্ছেন। দালালকে কেউ চিনে না তারা। অনেকেই মালয়েশিয়া থেকে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। এ মালয়েশিয়া যাওয়ার কথা ক্লিয়ার করেন।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ বলেন, ধৃত দালালের বিরুদ্ধে মানব পাচার আইনে নতুন করে মামলা দায়ের করে হবে। তার আগে তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। রোহিঙ্গাদের তাদের ক্যাম্পে পাঠানো হবে।
পাঠকের মতামত