নিখোঁজ মিলেছে সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে যাওয়া নিখোঁজ ছাত্রী ইয়াশা মৃধা সুকন্যার। নিখোঁজের প্রায় দুই মাস পর তার সন্ধান মিলেছে। একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে ইয়াশার খোঁজ মেলার সংবাদ দেওয়া হয়েছে। সেখানে ওই কলেজছাত্রীকে কথা বলতে দেখা গেছে। তবে মেয়েটি এখন কোথায় আছে প্রতিবেদনে তা বলা হয়নি।
ইয়াশা অভিযোগ করে বলেন, আমি আর মেনে নিতে পারছিলাম না। আমি রাতে ঘুমাতেও পারতাম না। সাড়ে তিন লাখ টাকার বিনিময়ে আম্মু আমাকে বিক্রি করে দিচ্ছিল। তিনি বলেন, আমি বাসায় ফিরে যেতে চাই না, কারণ আমি সেখানে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগি। কোনসময় আমাকে মেরে ফেলবে আমি জানি না।
তিনি আরও বলেন, আমি রাতে ঘুমাতে পারতাম না ভয়ে। আমাকে বালিশ চাপা দেয়া হত। আমি আমার নানু বাসায় গেলে সেখানেও আমাকে মানসিক ভাবে অত্যাচার করা হত। নানু খালি বলত, বিয়েটা করে ফেল। সাড়ে তিনলাখ টাকা দিবে, এটা তো কম না। তুই চাইলে আরও দিবে। আমার আম্মু আমাকে সাড়ে তিন লাখ টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দিচ্ছিল।
মায়ের নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে ইয়াশা বলেন, আমি ক্ষিধা সহ্য করতে পারতাম না। আম্মু সেটা জেনেও আমাকে দুদিন ঘরে বন্দি করে রেখেছিল। খাবারও দেয়নি। বাথরুমের পানি খেয়ে খেয়ে আমি নিজের জীবন বাঁচিয়েছি। ইশতিয়াক নামের ছেলে বন্ধুর বিরুদ্ধে মায়ের অভিযোগের বিষয়ে ইয়াশা বলেন, সে আমার খুব ভালো বন্ধু, ওর কোন দোষ নেই। তবু তাকে কারাগারে রাখা হয়েছে।
তবে মেয়ের এই অভিযোগকে অস্বীকার করেন মা নাজমা ইসলাম লাকী। তিনি দাবি করেন, ক্লাস সেভেনের পর থেকে কখনোই মেয়ের গায়ে হাত তুলেননি তিনি। তবে তিনি চাইতেন মেয়েকে ইন্টারের পরে বিয়ে দিতে। ইয়াশার মা ও বাবার একমাত্র চাওয়া, তাদের মেয়ে ফিরে আসুক।
এর আগে, শনিবার (২০ আগস্ট) সংবাদ সম্মেলনে নিখোঁজ ইয়াশার মা নাজমা ইসলাম লাকী বলেন, আমি মেয়ের সন্ধান চাই। আমাকে নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। আমার মেয়ের নাকি মানসিক সমস্যা। আবার ফোনে মেসেজ আসে আমার মেয়েকে নাকি মিরপুর ১, কখনও মিরপুর ১০ এ কখনও মিরপুর ১৪ তে নাকি দেখা গেছে। আমরা সেখানে গিয়ে খোঁজ পাইনি। সংশ্লিষ্ট থানা থেকেও বলছে এই ধরনের মেয়ে এলাকায় ঘুরতে দেখা যায়নি। তিনি বলেন, আমি আমার মেয়েকে জীবিত অবস্থায় শুধু ফিরে পেতে চাই। কোনও বিচার চাই না, কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে চাই না।