মাকে ভালোবাসে না এমন সন্তান হয়তো আছে কিন্তু সন্তানকে ভালোবাসে না এমন মা পৃথিবীর কোথাও পাওয়া যাবে না। ধর্ম-বর্ণ-জাতি নির্বিশেষে মায়ের অবস্থান সবার উপরে।
সেই মাকে ছাড়াই এবার ঈদ কাটাতে হচ্ছে পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের ছেলে মাহির ও মেয়ে টাপুরকে। মাকে ছাড়া ঈদ হলে কী হবে- মৃত্যুর আগেই ছেলে-মেয়ের জন্য ঈদের কেনাকাটা সেরে রেখেছিলেন মিতু আক্তার। গত ৫ জুন সকালে ছুরিকাঘাত ও গুলি করে মিতুকে হত্যা করা হয়।
ছেলে-মেয়ের জন্য ঈদের জামাকাপড় কিনে রাখলেও আদরের সন্তানদের সেই জামা পরে দেখে যেতে পারেননি মিতু।
মাহির-টাপুরের ঈদটা এবার কাটছে তাদের নানার বাসায়। মা ছাড়া এটাই ওদের প্রথম ঈদ। তবে মায়ের কেনা জামা গায়েই ঈদ উদযাপন করছে মাহির-টাপুর।
মাহির-টাপুর যাতে কোনোভাবে মায়ের অভাব বুঝতে না পারে, সর্বক্ষণ সে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন মিতুর বোন শায়লা মোশাররফ নিনজা। ঈদের সকাল থেকে বাসায় যত আয়োজন নিনজা করেছেন তার সবটাই মাহির-টাপুরকে ঘিরে। মাহির ও টাপুর আদর করে খালা নিনজাকে মামনি বলে ডাকে।
বৃহস্পতিবার নিনজার সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, আজ খুশির দিন। আজকের এই দিনে মা হারা বাচ্চা দুটার জন্য খুব মায়া হচ্ছে। ওদের মায়ের অভাবটা হয়তো পূরণ সম্ভব না। তবে লাঘব তো সম্ভব। সেই চেষ্টাই করছি।
নিনজা বলেন, ‘ওদের যত্নের জন্যই এখানে থাকা। তবে দুলাভাই ওদের প্রতিদিন নিজ হাতে খাইয়ে দেন। আমি আজ সকালেই ওদের ঘুম থেকে তুলে গোসল করিয়ে নতুন জামা-কাপড় পড়িয়েছি। সেমাই-নুডলস খাইয়ে দিয়েছি।’
নানী শাহিদা মোশাররফ বলেন, ‘মিতু ওদের জন্য ঈদের আগেই কেনাকাটা সেরেছিল। মায়ের কেনা জামা গায়ে দিয়েই ওদের ঈদ উদযাপন চলছে।’
ঈদের দিন বিকেলে ওদের নিয়ে কোথাও ঘুরতে যাচ্ছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নাহ! বাইরে আর কোথাও যাবো না। রামপুরাতেই চাচার বাসায় নিয়ে যাবো বেড়াতে।’
নিনজা বলেন, মেয়েটা বয়সে ছোট হলেও অনেক কিছু বুঝতে শিখেছে। ওরা আমাকে মামনি বলে ডাকে।
খালার আদর আর নানীর মায়াময় হাতের ছোয়ায় মায়ের অভাবটা লাঘব হচ্ছে হয়তো। হয়তো আপাতত ওরা বুঝতেও পারছে না। তবুও তো মা। মায়ের অভাব পূরণ করার সাধ্য কার!