চট্টগ্রামে আলোচিত পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্র মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানির তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী ১৩ নভেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি করবেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ মো. শাহে নূর এ সংক্রান্ত আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মহানগর পিপি অ্যাড. মো. ফখরুদ্দিন চৌধুরী।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ফখরুদ্দিন চৌধুরী জানান, মামলাটি বিচারের জন্য প্রস্তুত হয়ে কয়েকদিন আগে মহানগর হাকিম আদালত থেকে মহানগর দায়রা জজ আদালতে আসে। “বিচারক আজ দিন রেখেছিলেন। আসামি পক্ষ আজ জামিনের আবেদন করলেও আদালত তা নাকচ করে নতুন তারিখ দিয়েছে।”
এদিকে বৃহস্পতিবার দুই আসামির পক্ষে জামিনের আবেদন জানিয়েছিলেন তাদের আইনজীবীরা। আদালত তাদের আবেদন নামঞ্জুর করেছেন। এ মামলায় অভিযোগপত্রভুক্ত দুই আসামি হলেন- এহতেশামুল হক ভোলা ও মনির হোসেন।
গত ৫ জুন সকালে চট্টগ্রামের ও আর নিজাম রোডে সন্তানের সামনে গুলি চালিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয় সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মিতু মিতুকে। ওই মাসের ২৮ তারিখ ভোলা ও মনিরকে দুটি অস্ত্র ও গুলিসহ গ্রেপ্তারের কথা জানায় পুলিশ। বাকলিয়া থানায় তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে এ মামলা করা হয়।
পুলিশ বলে আসছে, ওই দুইজনের কাছ থেকে উদ্ধার করা পয়েন্ট ৩২ বোরের দেশি রিভলবার ও ৭ দশমিক ৬৫ বোরের পিস্তলটি মিতু হত্যায় ব্যবহার করা হয়েছিল। ভোলাকে হত্যা ও অস্ত্র আইনের দুই মামলায় আসামি করা হলেও ‘তার কর্মচারী’ মনিরকে শুধু অস্ত্র আইনে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। গত ১৪ জুলাই আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন মনির।
মিতু হত্যাকাণ্ডের কয়েক দিন আগে চট্টগ্রাম থেকে এসপি হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে ঢাকায় বদলি হয়েছিলেন তার স্বামী বাবুল আক্তার। স্ত্রী খুন হওয়ার পর দুই সন্তানকে নিয়ে ঢাকার বনশ্রীতে শ্বশুরবাড়িতে ওঠেন বাবুল।
ওই বাড়ি থেকে বাবুলকে গত ২৪ জুন ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে ১৪ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর নানা গুঞ্জন ছড়ায়। তখন তার কাছ থেকে জোর করে পদত্যাগপত্র নেওয়ার খবর ছড়ালেও সে বিষয়ে কেউই মুখ খুলছিলেন না।
গত ১৪ অগাস্ট স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল জানান, বাবুলের অব্যাহতির আবেদন তার কাছে রয়েছে। তার ২২ দিন পর ৬ সেপ্টেম্বর বাবুলকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন হয়।
প্রসঙ্গত, গত ৫ জুন নগরীর জিইসি মোড় এলাকায় দুর্বৃত্তদের গুলি ও ছুরিকাঘাতে নিহত হন মাহমুদা খানম মিতু। এ ঘটনায় মিতুর স্বামী বাবুল আক্তার অজ্ঞাতপরিচয় তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেন।
এছাড়া হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় ভোলা ও ভূষি শ্রমিক মনির হোসেনকে আসামি করে বাকলিয়া থানায় অস্ত্র আইনে আরেকটি মামলা করে পুলিশ। এ মামলায় গত ২৭ জুলাই আদালতে এ দুই আসামিকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট জমা দেয় বাকলিয়া থানা পুলিশ।