তীব্র গোলাগুলিতে দিশেহারা হয়ে বাংলাদেশে ঢুকে পড়া মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিপি) ১৪ সদস্যকে ফেরত পাঠাতে দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের সঙ্গে আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
রোববার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
রোববার সকাল থেকে তুমব্রু সীমান্তের মিয়ানমারের অভ্যন্তরে লাগাতার গুলি ও মর্টারশেলের শব্দ শোনা যাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, দুই সীমান্তের ৩৪ নং পিলারের ওপাড়ে মিয়ানমার অংশে জান্তা ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ চলছে।
সকালে একাত্তরের কাছে আসা একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, গোলাগুলির মাঝে দিশেহারা হয়ে ১৪ জনের মতো মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিপি) সদস্য বাংলাদেশ অংশে ঢুকে পড়েছে।
শনিবার বিকাল ৩টা থেকে টানা এক ঘণ্টা এই গোলাগুলির আওয়াজ পাওয়া যায়। এদিকে, গুলি সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশ অংশে পড়লেও এতে কেউ হতাহত হয়নি। গোলাগুলির ঘটনায় পুরো সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যান তারা।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারের ঘটনা নতুন নয়। বর্ডারগার্ড পুলিশ আমাদের সীমার ভিতরে ঢুকে সহযোগিতা চেয়েছেন। তাদের অস্ত্র জমা রেখে মিয়ানমারের সাথে যোগাযোগ রাখছেন।
মন্ত্রী বলেন, আমরা কোনো যুদ্ধে জড়াতে চাই না। আমাদের বিজিবির শক্তি সেখানে বৃদ্ধি করেছি। যাতে আমাদের সীমানায় কেউ প্রবেশ করতে না পারে।
এক প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন, ১৪ জন গভমেন্ট ফোর্স তাদের, ফেরত কেন নেবে না? তাদের ফেরত পাঠানোর জন্য পররাষ্ট্র দপ্তরের সাথে আলোচনা হচ্ছে।
মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সঙ্কটের কারণে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলেও আশঙ্কা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর।
‘বিভিন্ন কারনে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়নি। এই ঘটনায় সেটা বাধাগ্রস্ত হতে পারে,’ বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
শনিবার রাত সাড়ে দশটার দিকে মিয়ানমার থেকে ছোঁড়া একটি মর্টারশেল এসে পড়ে তুমব্রু সীমান্তের কোনারপাড়ার ইউনুছ ওরফে ভুলুর বাড়িতে। বাড়ির টিন ছিদ্র হয়ে মর্টারশেলটি ঘরের ভিতরে এসে পড়ে। তবে সেসময়ে পরিবারের সদস্যরা কেউ বাড়ি না থাকায় হতাহত হয়নি কেউই।
স্থানীয়রা জানান, মিয়ানমার সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর ৩৪ পিলার রাইট ক্যাম্প, ঢেঁকিবুনিয়া ক্যাম্প বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া। ক্যাম্পগুলোর এপারের সীমান্তে প্রচুর বাংলাদেশি জনবসতি রয়েছে।
আরাকান আর্মি রাখাইনের অনেক ক্যাম্প দখল করে নিয়েছে এবং এখন এই ক্যাম্পগুলোর দখল নিতে গোলাগুলি করলে তার অংশ এপারের সীমান্তে চলে এসে হতাহতের ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা সীমান্ত অঞ্চলের বাসিন্দাদের।