উখিয়া নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ৩১/০১/২০২৪ ৮:৫৩ এএম

অস্থিতিশীল মিয়ানমারের বিভিন্ন রাজ্যে জান্তা বাহিনীর সাথে দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর তুমুল লড়াই চলছে। সংঘাত থেকে বাঁচতে শত শত মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে অন্য এলাকায় পালিয়ে যাচ্ছেন। এ ছাড়া সামরিক বাহিনীর নির্বিচার গোলাবর্ষণে অনেকে নিহত ও আহত হয়েছেন। এর মাঝেই দেশটির শান রাজ্যের একটি শহরে জান্তা সৈন্যরা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাঁধানোর ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। সৈন্যদের হাত থেকে পালিয়ে আসা বাসিন্দারা বলেন, সেখানকার বাড়িঘরে আগুন দেওয়ার জন্য মুসলিমদের বাধ্য করছে জান্তা বাহিনী। একই সঙ্গে বাড়িঘরে আগুন দেওয়ার ছবি ও ভিডিও ধারণ করছে সৈন্যরা।

থাইল্যান্ড-ভিত্তিক মিয়ানমারের ইংরেজি দৈনিক দ্য ইরাবতির এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়ে বলা হয়েছে, কাচিন রাজ্যের বিদ্রোহী গোষ্ঠী কাচিন ইন্ডিপেন্ডেন্স আর্মি (কেআইএ) এবং তাদের মিত্র প্রতিরোধ বাহিনী পিছু হটার পর মিয়ানমার জান্তার সৈন্যরা উত্তর শান রাজ্যের মোমেইক শহরের দখল ফিরে পেয়েছে। জান্তা সৈন্যরা শহরটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পাশাপাশি কমপক্ষে আট বাসিন্দাকে হত্যা করেছে। একই সঙ্গে সেখানকার বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

এর আগে, গত ১৮ জানুয়ারি কেআইএ, অল বার্মা স্টুডেন্টস ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট (এবিএসডিএফ) এবং পিপলস ডিফেন্স ফোর্সের (পিডিএফ) সমন্বয়ে গঠিত যৌথ বাহিনী মোমেইক শহরে হামলা চালিয়েছিল। থানাসহ জান্তা সৈন্যদের ঘাঁটিতে হামলার পর গত ২৫ জানুয়ারি তারা শহরের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার ঘোষণা দেয়। পরে ওই দিন সন্ধ্যায় জান্তা বাহিনীর হামলায় পিছু হটতে বাধ্য হয় যৌথ বাহিনীর সদস্যরা। শহরটি থেকে পালিয়ে যাওয়া বাসিন্দারা বলেছেন, জান্তা সৈন্যরা শহরে বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়ার জন্য ফিরে আসে।

বিজ্ঞাপন

মোমেইকের স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেছেন, ‘‘জান্তা সৈন্যরা এখন শহরে অবস্থান করছে এবং বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিচ্ছে। তারা আড়ালে থাকা বাসিন্দাদের গ্রেপ্তার করেছে। রোববার নিজেদের বাড়িঘর দেখতে গিয়ে অন্তত পাঁচজন বাসিন্দা গ্রেপ্তার হয়েছেন। গৃহপালিত প্রাণীকে যারা খাবার দেওয়ার জন্য গ্রামে গিয়েছিল তাদেরও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’’

শহরের বাস্তুচ্যুত লোকজনকে সহায়তা করা স্থানীয় এক স্বেচ্ছাসেবকের মতে, জান্তা সৈন্যরা মোমেইকে বাড়িঘর পুড়িয়ে দিতে মুসলিম বন্দীদের বাধ্য করছে। এর মাধ্যমে জান্তা বাহিনী শহরে বিভাজনের বীজ বপন করতে চাইছে।

ওই স্বেচ্ছাসেবক বলেছেন, শহর থেকে পালিয়ে আসা একজন বাসিন্দা জানিয়েছেন, জান্তা সৈন্যরা বন্দীদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দিতে বাধ্য করেছে। তারা মুসলমানদের হাতে টর্চ দিয়ে ঘরবাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিতে বলছে। আগুন দিতে অস্বীকৃতি জানানো মুসলিমদের হত্যার হুমকি দেয় জান্তা সৈন্যরা। অগ্নিসংযোগের সময় সৈন্যরা ছবি তুলেছে। আমার ধারণা, শাসক সৈন্যরা এসব ছবি প্রচার এবং ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানোর জন্য ব্যবহার করবে। মুসলমানরা বাড়িঘর এবং ধর্মীয় স্থাপনায় আগুন দিচ্ছে বলে জান্তা বাহিনী প্রচারণা চালাবে।

তিনি বলেন, জান্তা সৈন্যরা শহরটি অবরোধ ও মুসলমানসহ অন্তত আটজন বাসিন্দাকে হত্যা করেছে। অনেক বাসিন্দা যুদ্ধের আগেই পালিয়ে গেছে। যারা থেকে গিয়েছিল জান্তা সৈন্যদের হাতে তারা নিহত অথবা গ্রেপ্তার হয়েছে।

সূত্র: দ্য ইরাবতি/ঢাকাপোষ্ট

পাঠকের মতামত

ঘুমধুম ইউপি’র প্যাড-ভুট্রো মেম্বারের প্রত্যয়নে মিয়ানমার থেকে অবৈধভাবে গরু পাচার

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার চোরাচালানের অভয়ারণ্য ঘুমধুম সীমান্ত দিয়ে চোরাই পথে পাচার করে আনা অবৈধ গরু-মহিষের ...

দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে রাখাইন, নতুন আশ্রয়প্রার্থীর আশঙ্কায় বাংলাদেশ

নজিরবিহীন সংকটে পড়তে যাচ্ছে প্রতিবেশী মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য। খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থায় উন্নতির সম্ভাবনা না থাকায় ...