মিয়ানমারে বিদ্রোহীদের হামলায় সেনাবাহিনীর একজন শীর্ষ কর্মকর্তাসহ পাঁচজন সেনাসদস্য নিহত হয়েছেন। ওই শীর্ষ কর্মকর্তা একজন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল বলে জানা গেছে।
মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ইরাবতী জানিয়েছে, গতকাল সোমবার বিকেলে কারেন রাজ্যের থিনগান নাইনাং শহরের আকাশে জান্তা বাহিনীর একটি একটি হেলিকপ্টার গুলি করে বিধ্বস্ত করে বিদ্রোহীরা। এ সময় একজন ব্রিগেডিয়ার জেনারেলসহ নিরাপত্তা বাহিনীর ৫ সদস্য নিহত হন। এ নিয়ে চলতি মাসে জান্তা বাহিনীর তিনটি উড়োজাহাজ ভূপাতিত করল বিদ্রোহীরা।
নাম না প্রকাশের শর্তে নিরাপত্তাবাহিনীর একজন সদস্য বলেন, ‘হেলিকপ্টারে থাকা দুজন সার্ভিসম্যান বেঁচে গেছেন।’ এ ব্যাপারে আর কোনো বিস্তারিত তথ্য তিনি জানাতে পারেননি।
স্থানীয় অন্যান্য গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, বিদ্রোহী গোষ্ঠী কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন ও তাদের সহযোগী পিপলস ডিফেন্স ফোর্স এ হামলা চালিয়েছে।
গত বছরের অক্টোবর থেকে উত্তর মিয়ানমারের তিন বিদ্রোহী গোষ্ঠী—মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি (এমএনডিএএ), তা’আং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ) এবং আরাকান আর্মি (এএ) জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে সম্মিলিত লড়াই শুরু করে। এরপর গত শুক্রবার তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে আরেক বিদ্রোহী গোষ্ঠী পা-ও ন্যাশনাল লিবারেশন অর্গানাইজেশন (পিএনএলও)।
মিয়ানমারজুড়েই এ বিদ্রোহী গোষ্ঠীর যোদ্ধারা জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করছে। ইতিমধ্যে বেশ কিছু এলাকা ও গুরুত্বপূর্ণ শহর বিদ্রোহীরা দখলে নেওয়ায় কোনঠাসা হয়ে পড়েছে জান্তা বাহিনী।
গত চার দিন ধরে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মির সঙ্গে তুমুল লড়াই চলছে জান্তা বাহিনীর। এখন পর্যন্ত ১২জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। প্রাণভয়ে রাজ্য ছেড়ে পালাচ্ছেন হাজার হাজার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মানুষ।
এর আগে ২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনী ব্যাপক দমন–পীড়ন শুরু করলে রোহিঙ্গারা ব্যাপকভাবে দেশত্যাগ করতে বাধ্য হয়। সেই সময়ে ১২ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছিল। এখন তারা কক্সবাজারে বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবিরে বসবাস করছে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে আবারও সীমান্ত পাড়ি দিয়ে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে প্রবেশ করার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। সুত্র: ইনডিপেনডেন্ট টিভি
পাঠকের মতামত