বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের ৫০০ মিটারের মধ্যে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয়। এই প্রতিষ্ঠানটি এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
এবারও এই কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষায় বসবে ৪৬৩ জন শিক্ষার্থী। যেখানে ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রয়েছে ১৫৯ জন। বাকিরা কক্সবাজারের বালুখালী ও কুতুপালংয়ের।
তবে সম্প্রতি মিয়ানমারে সামরিক জান্তার সঙ্গে বিদ্রোহীদের সংঘাতের প্রভাব পড়েছে দেশের সীমান্তবর্তী এসএসসি পরীক্ষার এই কেন্দ্র ও পরীক্ষার্থীদের মাঝে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে এই স্কুলের পাশে একটি মর্টার শেল এসে পড়ে। এতে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। এই অবস্থায় সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা শেষ করা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
স্থানীয়রা বলছেন, বাংলাদেশের প্রায় এক কিলোমিটার ভেতরে মর্টার শেল এসে পড়েছে। সেখানে অনেক লোকের সমাগম ছিল। তবে ফাঁকা জায়গায় পড়ায় এতে কেউ হতাহত হয়নি। তবে এতে এসএসসি পরীক্ষার্থীরা আতঙ্কে রয়েছেন। ভয়ে তারা পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে পারছেন না।
ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থীরা নিরাপদে বাড়িতে অবস্থান ও যাতায়াত নিয়ে রয়েছে শঙ্কায়। তবে স্কুল কর্তৃপক্ষ বলছে, তাদের নিরাপত্তায় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ‘পরীক্ষার্থীদের যাতে কোনো সমস্যা না হয় সেজন্য স্কুলের কমিটিসহ আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
এ অবস্থায় জেলা প্রশাসন চাইছে আলাদা জায়গায় দুটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কেন্দ্র স্থানান্তর করতে। এজন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে।
বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন বলেন, ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে কেন্দ্র হিসেবে স্থাপনের বিকল্প উপায় হিসেবে বিবেচনা করছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি, পরীক্ষা যেহেতু নিতে হবে সেক্ষেত্রে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে কেন্দ্র হিসেবে চালাব। এ বিষয়ে অনুমোদনের জন্য প্রাথমিক ও গণশিক্ষার অনুমোদন প্রয়োজন। তাই তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।’
পরীক্ষার কেন্দ্র বদল হলেও তমব্রু, কোনারপাড়া ও জলপাইতলীর শিক্ষার্থীদের নিয়ে রয়েছে আলাদা দুশ্চিন্তা। তাদের বাড়িতে অবস্থান ও যাতায়াতের নিরাপত্তা নেই বললেই চলে। তবে শিক্ষকেরা জানান, এসব পরীক্ষার্থীর জন্য আলাদা ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি বাংলা প্রথম পত্রের মধ্য দিয়ে শুরু হবে এবারের এসএসসি পরীক্ষা। শেষ হবে আগামী ১২ মার্চ। ২০২২ সালে এসএসসি পরীক্ষার সময়ও সীমান্তে সংঘর্ষ হয়। সে সময় কেন্দ্রটি কুতুপালং উচ্চ বিদ্যালয়ে স্থানান্তর করা হয়েছিল