মিয়ানমারে ক্ষমতাসীন জান্তা বাহিনীর প্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইং আগামী বছর দেশটিতে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন।
সোমবার (১৭ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম দ্য ইরাবতি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়ের মেইকতিলায় সেনাবাহিনীর একটি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ জান্তা প্রধান। সেই অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ২০২৫ সালে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সাল উল্লেখ করলেও কোন মাসে নির্বাচন হবে— সে সম্পর্কে স্পষ্ট কিছু বলেননি তিনি।
প্রসঙ্গত, মিয়ানমারে সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছিল ২০২০ সালের ৮ নভেম্বর। সেই নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করেছিল দেশটির গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি)।
কিন্তু মিয়ানমারের নির্বাচিত সরকারকে ২০২১ সালের ১ নভেম্বর অভ্যুত্থানের মাধ্যমে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইং এ অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন; অভ্যুত্থানের পর গঠিত সামরিক সরকারের প্রধানও হন তিনি।
অভ্যুত্থানের পরপরই বন্দি করা হয় অং সান সু চি এবং তার দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসির নেতা-কর্মী ও এমপিদের। সু চি সহ তার দলের নেতা-কর্মীদের অধিকাংশই এখনও কারাগারে রয়েছেন। সু চিকে ৩৩ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে জান্তা সরকার গত বছরের আগস্টে মিয়ানমারে সাধারণ নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রতিশ্রুতি পালন করেনি।
এবারও জান্তা সরকার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পারবে কি না— তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। কারণ গত ডিসেম্বর থেকে মিয়ানমারের বিভিন্ন প্রদেশে ব্যাপকমাত্রায় তৎপর হয়ে উঠেছে জান্তাবিরোধী বিভিন্ন সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী। এসব গোষ্ঠীর আক্রমণের মুখে অনেক অঞ্চলেই পিছু হটতে বাধ্য হচ্ছে সেনাবাহিনী।
আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমানে মিয়ানমারের মোট ভূখণ্ডের অন্তত এক পঞ্চমাংশ নিয়ন্ত্রণ করছে জান্তাবিরোধী বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠী।
পাঠকের মতামত