মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘাতের জেরে সোমবার বিকাল ৪টার পর থেকে আর কোনো বিস্ফোরণ বা গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়নি। এরপরও শঙ্কিত রয়েছে সীমান্তের মানুষ। তাদের দাবি, কখন আবার বিকট বিস্ফোরণের শব্দে ঘুম ভেঙে যায় তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। এ পরিস্থিতির মধ্যে টানা ২৩ দিন বন্ধ থাকার পর বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) ঘুমধুম সীমান্তের পাঁচটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় খুলে দেওয়া হচ্ছে। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ত্রিরতন চাকমা বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘ঘুমধুম সীমান্তের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় সাময়িকভাবে বন্ধ থাকা পাঁচটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বুধবার থেকে নিয়মিত ক্লাস চলবে।’
সর্বশেষ সোমবার সকাল ১০টা থেকে বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত থেমে থেমে মর্টার শেল ও গোলাগুলির বিকট শব্দ শুনেছে সীমান্তের হোয়াইক্যং উনচিপ্রাং এলাকার মানুষ। এ সময় মিয়ানমারের অভ্যন্তরে কালো ধোঁয়া দেখেছে তারা। এরপর থেকে মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টা পর্যন্ত আর কোনো শব্দ শোনা যায়নি। হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ আনোয়ারী জানিয়েছেন, পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক। এখন বিস্ফোরণ বা গোলাগুলির শব্দ নেই। তবু সীমান্তের লোকজন শঙ্কায় রয়েছে। এখনও বন্ধ আছে টেকনাফের নাফ নদসংলগ্ন চিংড়ি ঘেরের শ্রমিকদের আনাগোনা।
হোয়াইক্যং ইউনিয়নের লম্বাবিল এলাকার চিংড়িচাষি শাহীন শাহজাহান বলেন, ‘সোমবার বিকালের পর থেকে সীমান্তের ওপারের পরিস্থিতি স্বাভাবিক। তবে এখনও নাফ নদের নিকটে থাকা ঘেরে যেতে সাহস পাচ্ছেন না শ্রমিকরা। কখন আবার বিস্ফোরণ হয় তার কোনো ঠিক নেই।’
নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ জানিয়েছেন, সর্বশেষ শনিবার গোলাগুলির শব্দ শোনা গেলেও এখন আর নেই। তারপরও লোকজনের মন থেকে আতঙ্ক যাচ্ছে না। উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী জানান, এক মাস ধরে ওপারে গোলাগুলি ও মর্টার শেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। গোলাগুলি কখন বন্ধ হয়, কখন শুরু হয় বলা যাচ্ছে না। ফলে সীমান্তের চিংড়ি ঘেরে যাওয়া বন্ধ আছে শ্রমিকদের। তাদের মন থেকে শঙ্কা কাটছে না। রাখাইন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিজিবি সদস্যদের তৎপর রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিজিবি-২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ।
পাঠকের মতামত