নিখোঁজ বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য এম ইলিয়াস আলী বেঁচে আছেন ও পশ্চিমবঙ্গের কোনো একটি কারাগারে বন্দি আছেন এমন দাবি করেছেন তার আপন ছোট ভাই আসকির আলী। চ্যানেল আই-লন্ডনের স্ট্রেইট ডায়ালগ অনুষ্ঠানের লাইভ প্রোগ্রামে তিনি এ দাবি করেন।
তবে ইলিয়াসের স্ত্রী তাহসিনা রুশদি লুনা গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করেন। খবর বিভিন্ন ওয়েবসাইটের। আসকির আলী আরও বলেন, আমাদের কাছে বিভিন্ন সূত্র থেকে যে তথ্য রয়েছে তাতে দৃঢ় বিশ্বাস জন্মেছে, ইলিয়াস আলী এখনও জীবিত আছেন। তাকে ভারতের দমদমের কাছাকাছি কোনো এক কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়েছে। যেমন করে কলকাতায় সুখরঞ্জন বালি আছেন বলে গণমাধ্যমে খবর এসেছে।
এম ইলিয়াস আলী ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল রাতে রাজধানী ঢাকার গুলশান এলাকা থেকে নিখোঁজ হন। তারপর থেকে তাকে বহনকারী গাড়ির চালককেও পাওয়া যায়নি। তবে দুটি মোবাইল ফোনসহ গাড়িটি রাস্তায় পড়েছিল। নিখোঁজ হওয়ার পর ইলিয়াস আলীর মোবাইল ফোন থেকে বিভিন্ন ব্যক্তির ফোনে কল করা হয়। নিখেঁাঁজ হওয়ার পর তার মোবাইল থেকে বারবার বিভিন্ন ব্যক্তির ফোনে ফোন আসাকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
অনেকেই মনে করছেন ইলিয়াস আলীকে যারা গুম করেছে তারা এসব ফোন কলের মাধ্যমে জানাচ্ছেন, তিনি বেঁচে আছেন। তবে কোথা থেকে কে বা কারা ইলিয়াস আলীর ফোন ব্যবহার করছে তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী। এদিকে এ পর্যন্ত ইলিয়াস আলীর ফোন থেকে যেসব কল এসেছে সে সব মোবাইল নম্বর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কাছে জমা রয়েছে।
আসকির আলী অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, এখন পর্যন্ত সর্বস্তরের জনগণ ইলিয়াস আলীকে জীবিত অবস্থায় ফিরে পেতে দেশে-বিদেশে আন্দোলন-সংগ্রাম, বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছেন, সহযোগিতা করছেন। ইনশাআল্লাহ, সবার ঐকান্তিক সহযোগিতায় এবং আল্লাহর রহমতে তার ভাই ইলিয়াস আলীও নিশ্চিত ফিরে আসবেন।
কিন্তু তার স্ত্রী তাহসিনা রুশদি লুনা বলছেন, বিভিন্ন গণমাধ্যম এখন ইলিয়াস আলীকে নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। এ প্রসঙ্গে ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদি লুনা জানান, বিভিন্ন গণমাধ্যমে ইলিয়াস আলী জীবিত আছেন বলে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের একটি কারাগারে ইলিয়াস জীবিত আছেন বলে দাবি করেছেন আসকির আলী। কিন্তু বিভিন্ন গণমাধ্যম এখন ইলিয়াস আলীকে নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।
ইলিয়াস আলী জীবিত আছেন এমন খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়ার পর উদ্ধার প্রক্রিয়া চলছে কিনা জানতে চাইলে লুনা বলেন, উদ্ধার কাজ সরকারের, আমরা কেন তা করব?
ইলিয়াস আলীর ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) মাইনুল ইসলামও বলেন, কিছুদিন আগে দুটি পত্রিকা নিখোঁজ ইলিয়াস আলীকে নিয়ে খবর প্রকাশ করে। এতে ইলিয়াস আলীর জীবিত থাকার বিষয়টি নিয়ে লেখা হয়। ভারতের কোন কারাগারে তাকে বন্দি করে রাখা হয়েছে এমন তথ্য দেয়া হয় ওই খবরে। সেই তথ্যের সূত্র উল্লেখ করে ইলিয়াস আলীর ভাই আসকির আলী মঙ্গলবার লন্ডনে টিভির লাইভ প্রোগ্রামে এমন কথা বলেছেন।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে পিএস মাইনুল বলেন, গত ৬ মাস আগে নিখোঁজ ইলিয়াস আলীর মোবাইল ফোন থেকে কল এসেছিল। তখনও বিশ্বাস ছিল তিনি জীবিত আছেন। এরপর ৬ মাসে আর কোনো যোগাযোগ হয়নি তার হারানো মোবাইল ফোন থেকে।
সূত্র : ইউরো বিডি নিউজ
পাঠকের মতামত