সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারে যত সংঘর্ষই হোক, তার আঁচ পড়তে দেয়া হবে না এদেশের মাটিতে। সে জন্য বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তজুড়ে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে বিজিবি। এ বিষয়ে তারা নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে ওপারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সাথেও। দেয়া হয়েছে পতাকা বৈঠকের প্রস্তাব।
বেশ কিছুদিন ধরেই অস্থির সীমান্তের ও পার, মিয়ানমার। বান্দরবারের তুমব্রু বাজারের ঠিক উল্টো পাশে রয়েছে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ক্যাম্প। সেখান থেকে মিয়ানমারের বিদ্রোহী সশস্ত্র সংগঠনের সঙ্গে চলছে গোলাগুলি ও সংঘর্ষ। তবে সীমান্তের এ পারে বাংলাদেশের তুমব্রু গ্রামের মানুষের দৈনন্দিন কাজগুলো চলছে শঙ্কা মাথায় নিয়ে। সীমান্তের ও পারে গোলাগুলির আতঙ্কে আছে তুমব্রুর গ্রামবাসী। কখন দোকান বন্ধ করে ছুটতে হয়, সেই শঙ্কায় থাকতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের।
তুমব্রু গ্রামের পাশেই শূন্যরেখা। তার মাঝ বরাবর মিয়ানমারের জোরপূর্বক বাস্ত্যুচ্যুত নাগরিকদের বসতি। তার এ পাশে বাংলাদেশের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। সব মিলিয়ে বেশ পরিস্থিতি বেশ স্পর্শকাতর। তাই সতর্কতা অবলম্বন করেছে বাংলাদেশ। সীমান্ত জুড়ে সতর্ক অবস্থানে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিবি)। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য ২৪ ঘণ্টা সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বিজিবি।
৩৪ বিজিবির অধিনায়ক কর্নেল মেহেদি হোসাইন কবির বলেন, দেশপ্রেমকে সর্বোচ্চ আসনে রেখে সংযমের সাথে যেকোনো ধরনের পরিস্থিতিতে সরকারের আদেশ যেভাবে আমাদের কাছে পৌছাচ্ছে, আমরা সে অনুসারেই প্রতিপালনের চেষ্টা করছি।
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির সীমান্ত বেশ দুর্গম। তাই এই সীমান্তের ব্যবস্থাপনা সহজ কাজ নয়। সীমান্ত নিশ্ছিদ্র করতে তাই বিজিবির প্রস্তুতি বাড়ানো হয়েছে; এমনটি জানিয়ে কর্নেল মেহেদি হোসাইন কবির বলেন, অতিরিক্ত পোস্ট মোতায়েন এবং দিবারাত্রি টহল জোরদার করা হয়েছে, যাতে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে।
সীমান্তের যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলা করাটা যেমন দায়িত্ব, তেমনি বিজিবিকে দায়িত্বশীলতার পরিচয়ও দিতে হচ্ছে প্রতি মুহূর্তে। বাংলাদেশের মানুষদের মাঝে উদ্বেগ আছে। সেই উদ্বেগ নিরসনেও সচেষ্ট সংশ্লিষ্টরা। ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, প্রতিনিয়ত এখানে ৩৪ বিজিবির টহল থাকছে। তারা সতর্কতার সাথেই কাজ করছে। সীমান্তে সমস্যা নেই।
বাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারাও মাঠে থাকছেন ২৪ ঘণ্টা। প্রতিপক্ষকে মোকাবেলা ও সীমান্ত সুরক্ষায় অত্যাধুনিক প্রতিরক্ষা সরঞ্চাম নিয়ে প্রস্তুত বিজিবি। কর্নেল মেহেদি হোসাইন কবির বলেন, সীমান্তে যেসব প্রচলিত রীতি রয়েছে, সেসবের বিরুদ্ধে যেকোনো ধরনের কার্যক্রমে আমরা তাদের সাথে যোগাযোগ রাখছি, প্রতিবাদ লিপিও প্রেরণ করা হয়েছে। যেমন, শেল পড়ার ঘটনায় ব্যাটেলিয়ন পর্যায়ে প্রতিবাদলিপি প্রেরণ করেছি। এবং পরিস্থিতি যাতে আর খারাপের দিকে না যায়, সে জন্য ব্যাটেলিয়ন পর্যায়ে পতাকা বৈঠকের জন্য আমরা চিঠি দিয়েছি।
বিজিবির এই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সীমান্তের সুরক্ষায় কোনো ছাড় দেবে না বাংলাদেশ। মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সমস্যার সুযোগও নিতে দেয়া হবে না কাউকে। সুত্র ; যমুনাটিভি
পাঠকের মতামত