মিয়ানমার সেনাবাহিনীর শতাধিক সেনা সশস্ত্র বিদ্রোহী সংগঠন আরাকান আর্মির কাছে আত্মসমর্পণ করেছে বলে দাবি করেছে সশস্ত্র গোষ্ঠীটির মুখপাত্র খাইং থুখা।
মিয়ানমারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ইরাবতী এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে আরাকান আর্মির মুখপাত্র এই দাবি করেন।
তিনি বলেন, নতুন করে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার পর পালেতওয়াকে কর্মকর্তাসহ অন্তত ১০ জান্তা সেনা তাদের অস্ত্রসহ পক্ষ ত্যাগ করেছে। লড়াই শুরুর আগেও অনেকে তাদের বাহিনীতে যোগ দিয়েছে। মে মাসে রাখাইন রাজ্যে লড়াই শুরু হওয়ার আগে ৯০ জনের মতো জান্তা সেনা আরাকান আর্মিতে যোগ দিয়েছেন।
রাখাইন জাতিগোষ্ঠীর একটি প্রভাবশালী সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। মে মাসে আরাকান আর্মির সঙ্গে সম্পর্কের অভিযোগ তুলে স্থানীয়দের সরকারি সেনারা গ্রেপ্তার করা শুরু করলে উত্তেজনা শুরু হয়।
২০২০ সালের নভেম্বরের সাধারণ নির্বাচনের আগে শুরু হওয়া অঘোষিত অস্ত্রবিরতির পর প্রায় ১৬ মাস রাখাইন ও পালেতওয়াতে সংঘাত থেমে থাকে। তবে গত কয়েক সপ্তাহে সংঘাত নতুন করে ছড়িয়ে পড়েছে।
মে মাস থেকে পালেতওয়াতে বিচ্ছিন্ন সংঘর্ষ চলছিল। আগস্ট মাসে মিয়ানমার-ভারত সীমান্তবর্তী অঞ্চলে সংঘাত জোরদার হয়। একই সময়ে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের কাছে মংডু টাউনশিপেও সংঘাত ছড়িয়ে পড়েছে।
মংডু ও পালেতওয়ার বেশ কয়েকটি এলাকায় স্থল ও নৌপথে পণ্য পরিবহণ ঠেকাতে অবরোধ জারি করেছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। এতে স্থানীয়রা জরুরি খাদ্য ও অন্যান্য পণ্যের ঘাটতির মুখে পড়েছেন। এই শহরগুলোতে ফোন ও ইন্টারনেট পরিষেবাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ও ভারত সীমান্তবর্তী সেনাবাহিনীর কয়েকটি ফাঁড়ি দখল করার দাবি করেছে সশস্ত্র গোষ্ঠীটি। আরাকান আর্মির দাবি, তাদের দখল করা ফাঁড়িগুলো পুনরুদ্ধারে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী বিমান ও কামান হামলা চালিয়েছে। কিন্তু এতে সেনাবাহিনী ব্যর্থ হয়েছে। ফাঁড়িগুলো এখনো তাদের দখলে রয়েছে।
মুখপাত্র বলেন, এই মুহূর্তে আমরা ভালো অবস্থানে আছি। কিন্তু সামরিক সরকার ক্রমাগত সেনা মোতায়েন বাড়াচ্ছে। আগামী কয়েক সপ্তাহ লড়াই আরও জোরদার হতে পারে।