সীতাকুণ্ডে ইকোপার্ক ও বোটানিক্যাল গার্ডেনে পোর্ট সিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী মুন্নী আক্তার (২৪) হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তার ঘনিষ্ঠ বান্ধবী একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ফাহমিদা হক যুথিকে (২৪) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার রাতে তাকে গ্রেফতার করে গতকাল আদালতে সোপর্দ করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. কামাল উদ্দিন। এর আগে এই ঘটনায় গত মঙ্গলবার ভোর রাতে মুন্নীর প্রেমিক রমজান আলী রাহাতকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। জানা যায়, গত ১৩ মে চট্টগ্রামের পোর্ট সিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্সের ছাত্রী মুন্নী আক্তারকে বেড়ানোর নাম করে সীতাকুণ্ডে ইকোপার্কে নিয়ে হত্যা করে তার বর্তমান ও সাবেক ২ প্রেমিক, ঘনিষ্ঠ ২ বন্ধু এক বান্ধবী ও বান্ধবীর বয় ফ্রেন্ড। তারা অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে মুন্নীকে সেখানে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে লাশ পাহাড়ের গভীর জঙ্গলে ফেলে রেখে চলে যায়। নিহত মুন্নী আক্তার (২৪) পটিয়া উপজেলার উত্তর গোবিন্দর খীল গ্রামের আবুল কালামের কন্যা ও নগরীর পোর্ট সিটি ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্রী। সে নগরীতে তার এক আত্মীয়ের বাসায় থেকে পড়াশোনা করে আসছিলো। প্রেমঘটিত ঘটনা নিয়ে তার বান্ধবী যুথি, প্রেমিক রাহাতসহ ৬ বন্ধু মিলে সীতাকুণ্ডের ইকো পার্কে নিয়ে এসে খুন করে মুন্নিকে। গত বুধবার সন্ধ্যায় মুন্নীর প্রেমিক রমজান আলী রাহাত ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তার দেয়া জবানবন্দিতে খুনের রহস্য উদঘাটিত হয়।
জবানবন্দিতে রাহাত জানান, মুন্নির বান্ধবী যুথি পূর্ব পরিকল্পনা মতে প্রতিশোধ নিতে গত ১৩ মে দুপুরের তারা ৬ বন্ধু-বান্ধবী মিলে মুন্নিকে সীতাকুণ্ড ইকোপার্কে বেড়াতে নিয়ে যায়। দিনভর সেখানে বেড়ানোর পর সন্ধ্যার দিকে পার্কের গভীর জঙ্গলের কাছে নিয়ে তারা মুন্নীকে মাটিতে ফেলে কুপিয়ে হত্যা করে লাশ ফেলে দেয়। ঘটনার পরদিন হত্যাকারীরা সবাই চমেক হাসপাতালের মর্গে গিয়ে মুন্নীর লাশ দেখে যথেষ্ট কান্নাকাটিও করে। এদিকে তদন্তকালে মোবাইল কললিস্টের সূত্র ধরে মুন্নীর ঘটনার সাথে জড়িত সবার ওপর নজরদারি শুরু করে পুলিশ। শেষ পর্যন্ত গত মঙ্গলবার ভোর রাতে নগরীর পোর্ট কলোনি ১নং রোডের ১/সি বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় মুন্নীর প্রথম প্রেমিক রমজান আলী রাহাতকে। শনিবার রাতে গ্রেফতার করা হয় বান্ধবী যুথিকে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. কামাল উদ্দিন মুন্নী হত্যার ঘটনায় তার বান্ধবী যুথিকে গ্রেফতারের কথা স্বীকার করে বলেন, সামাজিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় তারা যুথির পুরো ঠিকানা আপাতত প্রকাশ করছেন না। এ ঘটনায় জড়িত অন্যদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে। সীতাকুণ্ড মডেল থানার ওসি মো. ইফতেখার হাসান বলেন, খুনিরা সবাই আমাদের নজরদারিতে আছে। অল্প দিনের মধ্যেই এ ঘটনায় জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান তিনি।
-