মুড সুইং নিয়ে আবারও কিছু পোস্ট দেখলাম। সবার কথা একটাই- ছেলেরা মেয়েদের মুড সুইং বোঝে না, সুতরাং তাদের বুঝতে হবে।আমার অভিজ্ঞতা বলে যে, মেয়েরাও মেয়েদের মুড সুইং বোঝে না। অন্তত আমার মুড খারাপ কখনো আমার মা, বান্ধবী বা কলিগরা অ্যাটলিস্ট ফিল করেছে বলেও মনে পড়ে না। অথচ সব মেয়েই কিন্তু কমবেশি মুড সুইং এর স্বীকার।
এই মুড সুইং হয়তো একেকজনের একেক রকম, প্রত্যেকের মাত্রা আলাদা। কারও কম। কারও বেশি। কিন্তু এর প্রভাবে যে মেয়েদের আচরণ কিছুটা হলেও বদলায় তা কিন্তু সবার বেলাতেই এক।
তবুও আমরা যখন কোনো মেয়েকে হঠাৎ কোনো কারণ ছাড়াই বিষণ্ণ, হতাশ, রাগ বা উত্তেজিত অবস্থায় দেখি আমাদের প্রাথমিক রিঅ্যাকশন হয়- মেয়েটা ন্যাকামি করছে, মেয়েটা রগচটা, সাইকো ব্লা ব্লা।
আমি কখনো দেখি নাই, পুরুষ তো দূরের কথা আমার মা বোনদেরও ব্যাপারটাকে পাত্তা দিতে। বিয়ের আগে এমন কিছু হলে আম্মু ভাবতো হয় পড়া ফাঁকি দেই নয়তো প্রেমে ছ্যাকা ট্যাকা খেয়েছি। বিয়ের পর এইসব সময়ে হয়তো মা ভাবতো আলসেমি করে কাজ টাজ ফাঁকি দিচ্ছি। অফিসে কলিগরা তো বুঝতেই চায় না।
আবার আমিও কিন্তু একইরকম। আমার মা যখন এসে বলে তার ভাল্লাগে না আমি দ্বিতীয়বার জিজ্ঞেস করিনা কেন ভাল্লাগে না। কলিগকে যখন দেখি মন খারাপ করে কাজ করতে মনে হয় অযথাই ন্যাকামি করছে বা কাজ ফাঁকি দেওয়ার ধান্দা করছে।
সুতরাং আমরা মেয়েরাও মেয়েদের সমস্যা বুঝি না।
আমি আমার মায়েরটা বুঝি না, আমার মা আমার ভাই বউয়েরটা বুঝে না, আমার ভাই বউ তার শ্বাশুড়িরটা বুঝে না। আবার আমি আমার কলিগকে বুঝি না, আমার কলিগও আমারটা বুঝে না।
অথচ, আমরা বড় গলায় আবদার করি ছেলেরা আমাদের সব বুঝবে! যেন ২৪ ঘণ্টা আমরা বাপ, ভাই, প্রেমিক, স্বামীদের সাথেই সময় কাটাই!
আরেকটা কথা বলি- আমার ধারণা, যত বেশি কাজে ব্যস্ত থাকা যায় তত বেশি মুড সুইং এর সাথে ফাইট দেওয়া যায়। ব্যস্ততা কম থাকলে এই সমস্যা আরো পেয়ে বসে।
সুতরাং কর্মব্যস্ত থাকুন, অন্যের সাপোর্টের চাইতে নিজেই বরং নিজের সাপোর্ট হোন।
লেখক : ফারজানা আক্তার মুনিয়া।