আদালতের নির্দেশনা ছিল অবৈধ ইটভাটাগুলো ভেঙে ফেলার। কিন্তু নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের এক ডজন অবৈধ ইট ভাটার মধ্যে চারটি অবৈধ ইটভাটায় ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান পরিচালনা করা হয়। ৪ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয় । ইট নষ্ট না করা ও ইটভাটা গুলো ভেঙ্গে না ফেলার ফলে আবারো পুরোদমে চলছে ইটভাটা গুলো। ইটভাটা মালিকদের দাবি ‘ম্যানেজ’ করেই তারা ভাটায় কাজ করছেন। ফলে আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে প্রশাসনকে ‘ম্যানেজ’ করে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের অবৈধ ভাটায় ইট তৈরির কাজ চলছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। এতে একদিকে যেমন পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে, অন্যদিকে রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।
স্থানীয় জনগণের তথ্য মতে, নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে এক ডজনের উপরে ইটভাটা রয়েছে। ইটভাটাগুলো হলো ঘুমধুম ইউনিয়নের ASB’ ইটভাটা, BHB’ ইটভাটা, AFD, ইটভাটা, মিলন মিস্ত্রির HSB ইটভাটা, সাজু বড়ুয়ার DSB ইটভাটা,HKB ইটভাটা, ফরিদ কোম্পানির BBM ইটভাটা, আবুল কালাম মেম্বারের KRS ইটভাটা, খালেদ সরওয়ার হারেজ KRE ইটভাটা, বাবুর HAZI সহ আরও একাধিক ইটভাটা রয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে সকাল-সন্ধ্যা অবৈধ ভাটাগুলোতে চলছে ইট তৈরি ও পোড়ানোর কাজ। কয়লার পাশাপাশি এসব ভাটায় ব্যবহার হচ্ছে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কাঠের গুঁড়া। এতে বায়ুর পাশাপাশি ফসলি জমিরও ক্ষতি হচ্ছে।
কীভাবে অবৈধ ভাটায় ইট তৈরি হচ্ছে, জানতে চাইলে KRS ইটভাটার মালিক আবুল কালাম বলেন, ‘ইটভাটার কাগজপত্রের জন্য জেলা প্রশাসক ও পরিবেশ অধিদপ্তরে আবেদন করা রয়েছে। আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যে কাগজপত্র পেয়ে যাব।’ সবাই আবেদন করে এভাবেই ইটভাটায় ইট তৈরি করছে। সব কিছু প্রশাসন অবগত রয়েছে।
এছাড়াও নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক একাধিক অবৈধ ভাটার মালিক বলেন, ‘প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই অবৈধ ইটভাটা চালিয়ে আসছি। ম্যানেজ না হলে অবৈধ ভাটা এক দিনও চলতে পারবে না। হাইকোর্টের নির্দেশের পর সম্প্রতি মাত্র চারটি ইটভাটায় অভিযান পরিচালিত হয়, চারটি ইটভাটাই চার লাখ টাকা জরিমানা করা হলেও অবৈধ ভাটা ভাঙা হয়নি।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে বান্দরবান পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ফখর উদ্দিন বলেন, ইতিমধ্যে ইটভাটায় অভিযান পরিচালনা করে ৪ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে অবৈধ ইটভাটায় এ অভিযান চলমান থাকবে।
এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোমেন শর্মা বলেন, অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে যতদ্রুত সম্ভব অভিযান চলানো হবে এবং আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ ইতিমধ্যে কয়েকটি ইটভাটায় অভিযান চালানো হয়েছে, এ অভিযান চলমান থাকবে বলে তিনি জানান।