ময়মনসিংহে বিএনপির ডাকা সমাবেশে কর্মী সমাগম ঠেকাতে যান চলাচল বন্ধের পর এবার সড়কে উপস্থিত হচ্ছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের লোকজন। কোথাও লাঠি হাতে, কোথাও মিছিল নিয়ে সড়কে অবস্থান করছেন তারা। এ সময় গাড়ি তল্লাশি, গাড়ির চালককে মারধরসহ যাত্রীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সরেজমিনে শনিবার (১৫ অক্টোবর) সকাল ৯টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের চান্দনা চৌরাস্তা থেকে ত্রিশাল বাজার পর্যন্ত সড়কের বিভিন্ন পয়েন্ট এ চিত্র পাওয়া গেছে। সড়কে এ সময় কেবল আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ–সহযোগী সংগঠনের লোকজনের উপস্থিতি দেখতে পাওয়া গিয়েছে।
বেলা ১১টার দিকে মহাসড়কের ত্রিশাল বাজারের সামনে ২০০ নেতা-কর্মীর জটলা ছিল। তাঁদের কারও হাতে লাঠি, কারো হাতে কাঠের টুকরা, কারো হাতে রড। তারা অবস্থান করছেন সড়কের ঠিক মাঝখানে। এর মধ্যে কোনো ট্রাক, পিকআপ বা ছোটখাটো যাত্রীবাহী বাস আসতে দেখলেই পথ আটকে দাঁড় করাচ্ছেন তারা। যানগুলো তল্লাশি করার পাশাপাশি যাত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদ করছেন আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। গাড়িতে তারা মূলত খুঁজছেন বিএনপির কোনো নেতা-কর্মী সমাবেশে যাচ্ছেন কি-না। কোনো যাত্রী প্রতিবাদ করতে গেলে তাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে, মারধর করে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ১০০ মিটার দূরে কথা হয় ট্রাকচালক মো. রোকনুজ্জামানের সঙ্গে। তিনি বলেন, তার গাড়ি ছেড়ে দিতে অনেক অনুরোধ করছিলেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের। কিন্তু তাতে কাজ হয়নি। এক পর্যায়ে তিনি গাড়ি ছেড়ে দিতে গেলে নেতা-কর্মীরা ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে মারধর করেন। তিনি বলেন, ‘আইজক্যা যে কইরাই হোক ডিমের ট্রিপ নিয়া ঢাকা যাওন লাগব। আমি অনেকবার কইলাম আমার গাড়িটা ছাড়তে। কিন্তু তাঁরা তা করে নাই। একপর্যায়ে আমি একটু জোরে গাড়ি টান দিতে গেলে আমাকে সমানে থাপরাইতে থাকে। কী করুম! গরিব মানুষ। এক দিন কাজ বন্ধ থাকলে টানাটানি লাইগ্যা যায়।’
সড়কে থাকা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের কয়েকজন জানান, দলীয় নির্দেশনা মোতাবেক তারা বিএনপির সমাবেশে জনসমাগম ঠেকাতে সড়কে অবস্থান করছেন। যে কোনো মূল্যে বিএনপিকে ঠেকানোই তাদের কাজ।
সড়কে এভাবে লাঠিসোঁটা নিয়ে অবস্থানের বিষয়ে জানতে চাইলে ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মাইনুদ্দিন বলেন, ‘সড়কে এমন কোনো ঘটনা নেই। আমি একটু আগেও ঘুরে এসেছি। কাউকে দেখিনি।