টানা ভারী বর্ষণ এবং পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে গেছে পর্যটন নগরী কক্সবাজার। ম্মরণকালের এ বন্যার জন্য অপরিকল্পিত উন্নয়ন, পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ধ্বংস, যত্রতত্র হোটেল-মোটেল তৈরিকে দায়ী করেছেন স্থানীয় সচেতন মহল। ভবিষ্যৎ বন্যার হাত থেকে পর্যটন নগরীকে রক্ষা করতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন স্থানীয়রা।
কক্সবাজার নাগরিক ফোরামের সভাপতি আবু নাসের হেলাল বলেন, ‘কক্সবাজারের মানুষ গত এক শ বছরে এ ধরনের বন্যা দেখেনি।
বন্যার কারণই হচ্ছে অপরিকল্পিত উন্নয়ন এবং নির্বিচারে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা ধ্বংস করা। এতে কক্সবাজারের পর্যটন শিল্প মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ’
তিনি বলেন, ‘আগামীতে বন্যা থেকে কক্সবাজার শহরকে রক্ষা করতে এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে। পানি নিষ্কাশনের ছড়া ও ড্রেনগুলো দখলমুক্ত করতে হবে।
কিছু কিছু এলাকায় নতুন করে পানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেন করতে হবে। ’ স্থানীয়দের অভিযোগ- পানি নিষ্কাশনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় শহরটির প্রধান সড়ক ও সাগর পাড়ের কলাতলি এলাকা সামান্য বৃষ্টিতেই তলিয়ে যায়। সর্বশেষ টানা বৃষ্টিতে শহরের কমপক্ষে ২০টি সড়ক ও উপসড়কসহ গলি হাঁটু এবং কোমরপানিতে তলিয়ে গেছে। সাগরপাড়ের কলাতলি সড়কটি তলিয়ে যাওয়ায় হোটেল কক্ষেই আটকা পড়েন অনেক পর্যটক।
স্মরণকালের এ বন্যার জন্য অতিরিক্ত বৃষ্টিসহ কমপক্ষে ছয়টি কারণকে চিহ্নিত করেছে স্থানীয় সচেতন মহল।
যার মধ্যে রয়েছে- অপরিকল্পিত উন্নয়ন, যত্রতত্র হোটেল নির্মাণ, পর্যাপ্ত পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকা, হোটেল শৈবাল এবং ঝাউতলা এলাকার ড্রেন ভরাট ও দখল। এ ছাড়া গোলদিঘী পাড়ের ড্রেন ভরাট ও দখল অন্যতম।
কক্সবাজারে সাম্প্রতিক কালের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে গত শুক্রবার। কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ তোফায়েল হোসেন জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টা থেকে শুক্রবার বিকাল ৩টা পর্যন্ত ৫০১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
এর আগে ২০১৫ সালের ২৪ জুন এক দিনে ৪৬৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছিল। টানা বর্ষণে কক্সবাজার শহরের নিম্নাঞ্চলসহ অধিকাংশ এলাকা তলিয়ে যায়। জলাবদ্ধতার কারণে অনেক সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়েছেন মানুষ। তলিয়ে যায় ব্যস্ততম ৫ কিলোমিটার প্রধান সড়ক ও সৈকত সড়ক। বাজারঘাটা, বড়বাজার, অ্যান্ডারসন রোড, টেকপাড়া, বার্মিজ মার্কেট এলাকা, বৌদ্ধ মন্দির রোড, গোলদিঘির পাড়, তারাবনিয়াছড়া ও রুমালিয়াছড়া এলাকার শতাধিক দোকান, অফিস ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান প্লাবিত হয়। হাজার হাজার ঘরবাড়িও পানিতে তলিয়ে গেছে।