আমি সাংবাদিক না।আমি রাজনীতিবিদও না।আমি নই মোটেও ক্ষমতাধর।আমি অস্ত্রধারী।আমার এক এবং একমাত্র অস্ত্র হলো কলম।কালেভদ্রে প্রতিবাদ আর বিদ্রোহ জরুরতে কলম আমার চলে বায়ুবেগে আর রকেটগতিতে।
ইংরেজি Gourd শব্দের বাংলা প্রতিশব্দ লাউ।চাঁটগাইয়া ভাষায় আমরা লাউকে কদু নামে সম্বোধন করি।”স্বাদের লাউ বানাইলো মোরে বৈরাগী” শিরোনামে আমরা লাউ নিয়ে গানও করি।
প্রসঙ্গ রোহিঙ্গা ক্যাম্প।রোহিঙ্গা ইনফ্লাক্সের পর থেকে আজ অবধি দক্ষিণ চট্টলা মানে রোহিঙ্গা নিউজ।কটা দিন ধরে হট নিউজ রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে স্থানীয় ছেলেমেয়েদের পূর্বপরিকল্পিত,ইচ্ছাকৃত এবং উদ্দেশ্য প্রণোদিত ছাঁটাই।
ব্যাপারখানা যথেষ্ট অনুচিত,গর্হিত এবং অবিচারের শামিল।উখিয়া টু টেকনাফবাসী রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে গিয়ে হারালো বনজ সম্পদ,ভিটেবাড়ির একাংশ,জমিজমা। কাঠুরিয়া হয়ে পড়েছে পেশাহীন।খালে যাওয়া জেলেরা প্রায়শ পেশাহীন।
বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গের মানুষের ধাপে ধাপে ঢল আসে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চাকরির সন্ধানে।কতক বোয়াইঙ্গাদের যেন আমরা দুধ কলা দিয়ে কালসাপ পুষেছি।বোয়াইঙ্গারা যেন খাল কেটে কুমির আনার শামিল।তারা দেশপ্রীতি ইনসাফ না করে স্বজনপ্রীতির আশ্রয় নিয়েছে বহুলাংশে।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চাকরি কক্সবাজারের স্থানীয় ছেলেপুলের দাবি নয় অধিকার।কোনভাবে সহ্য করার কথা নয় যে “ঘরের সিন্নী পরে খায়,সখিনা ভিক্ষার থাল নিয়ে বেড়ায়”।
ধন্যবাদ পালস বাংলাদেশকে।ধন্যবাদ মুক্তি কক্সবাজারকে।ধন্যবাদ শেড সংস্থাকে।ধন্যবাদ আরো কতক স্থানীয় এনজিও সংস্থাকে যারা স্থানীয়দের ৯০% কিংবা ১০০% চাকরি নিশ্চিত করেছে।
বড় বড় ইন্টারন্যাশনাল সংস্থাগুলো করেই চলছে প্রহসন।কখনো যোগ্যতার অভাবের অজুহাত,কখনো অভিজ্ঞতার অজুহাত।অথচ উত্তরবঙ্গ থেকে সবে চাকরিতে যোগদানের সুযোগ নিয়ে উড়ে এসে জুড়ে বসছে।
স্থানীয়দের সিভিগুলো রিজেক্টেড ঘোষণা হয়।পুড়িয়ে ফেলা হয়।ডাস্টবিনে নিক্ষেপ করা হয়।পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্য ২০০০০-৩০০০০ টাকা সেলারিতে ভলান্টিয়ার নিয়োগ দেয়া হয়।শিক্ষকতা পেশার জন্য স্থানীয়দের ১২০০০-২৪০০০০ টাকা সেলারিতে সুবিশেষ সান্ত্বনা দেওয়া হয়।নানা ছলচাতুরি ও গোছানো নাটকীয় অজুহাতে স্থানীয়দের প্রমোশন আটকানো হয়।
স্থানীয় তেমন বেশী চাকরীজীবী পাওয়া যাবেনা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যারা ৫০০০০+ সেলারী পায়।ব্র্যাক সংস্থা একজন কর্মীর বেতন তিনজনকে ভাগ করে দিয়ে অগুণিত কর্মী নিয়োগ দিয়ে কম বেতনে শোষণ করছে।তাও আবার প্রজেক্ট শেষ দোহাই দিয়ে হ্যালো পিংকি ফর্মূলা জারি করে স্থানীয়দের ছাঁটাইয়ের প্রহসনে নেমেছে।
স্থানীয়দের ৫০০০০+ সেলারী যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে পাওয়ার সুযোগ দিচ্ছেনা বোয়াইঙ্গারা।অল্প বেতনে বেশকিছু স্থানীয়দের নামমাত্র নিম্নপদে বহাল রাখাটা ছেলের হাতে মোয়া দিয়ে,বুড়ার হাতে কলা দিয়ে বউয়ের মন নেয়ার পাঁয়তারা।
উচ্চ পদে থাকা কতক হারামখোর স্থানীয় চাকরীজীবী আছে যারা স্থানীয়দের সুযোগতো দেয়না,ফিরে তাকিয়ে পরামর্শটুকুও দেয়না।তারা নিজেরা যেন ঘরের শত্রু বিভীষণ।তারা নিজেরা যেন বোয়াইঙ্গাদের সাথে লাল কুত্তা শিয়ালের ভাই।
আমরা স্থানীয়রা নামমাত্র পদে,প্রকাশমাত্র সেলারীতে কিংবা ছাঁটাইয়ের প্রহসনে পড়ে যে লাউ সে কদু রয়ে যাচ্ছি।সাদা চামড়ার বিদেশীরা ঠিক সাজানো পুতুল।বিদেশীদেরকে যেমনে নাচানো হয় তেমনি নাচে।
আমরা স্থানীয়রা অধিকারহারা।আমরা বঞ্চিত।আমরা লাঞ্চিত।আমাদেরও অধিকার আছে দামি গাড়িতে চড়ার।আমাদেরও অধিকার আছে হ্যাণ্ডসাম সেলারী ভোগ করার।আমাদেরও অধিকার আছে স্থানীয় ছাঁটাই অভিশাপমুক্ত হবার।আমাদেরও অধিকার আছে ইন্টারন্যাশনাল সংস্থাতে ভাইভা ফেইস করার সুযোগ পাওয়ার।
প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর
হুমায়ূন কায়সার মামুন
ন্যায্য অধিকারহারা স্থানীয় যুবক।
পাঠকের মতামত