সুখ-শান্তি, সমৃদ্ধি ও প্রাচুর্যতা সবার কাম্য। অন্য সব কিছুর মতো এসবও মহান আল্লাহর দান। তিনিই মানুষের দুঃখ-কষ্ট লাঘব করেন। বিষাদ-যন্ত্রণা ও অভাব-অনটন দূর করেন। তাই সর্বদা তার কাছে সাহায্য ও কল্যাণের প্রার্থনা করতে হবে।
জীবনে সচ্ছলতা ও সফলতা আনতে মানুষ অনেক চেষ্টা-শ্রম করে। সফলতার জন্য শ্রমের যেমন প্রয়োজন তার চেয়ে বেশি প্রয়োজন মহান আল্লাহর সাহায্যের। কোরআন-হাদিসে উল্লেখিত আমলগুলো প্রত্যেকের জন্য কল্যাণকর। সেসব জীবনে সমৃদ্ধি ও সাফল্য বয়ে আনে। ঢাকা পোস্টের পাঠকদের জন্য এখানে কয়েকটি আমল তুলে ধরা হলো—
তাকওয়া ও আল্লাহ-ভরসা
মহান আল্লাহকে ভয় করা হলো তাকওয়া বা খোদাভীতি। আর সর্বাবস্থায় তার প্রতি অবিচল আস্থা রাখাকে বলে তাওয়াক্কুল। এই দুইটি মহৎ আমল রিজিকে বরকত আনে। প্রাচুর্যতার অন্যতম বড় কারণ।
মহান আল্লাহ বলেন—
আর যে আল্লাহকে ভয় করে, তিনি তার জন্য উত্তরণের পথ বের করে দেন এবং তিনি তাকে এমন উৎস থেকে রিজিক দেন, যা সে কল্পনাও করতে পারে না। আর যে আল্লাহর ওপর ভরসা রাখে, তিনিই তার জন্য যথেষ্ট। আল্লাহ অবশ্যই তার উদ্দেশ্য পূর্ণ করবেন। . . ’
(সুরা তালাক, আয়াত : ২-৩)
আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা
আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখা ইসলামে গুরুত্বপূর্ণ। পরিবারে ও সংসারে বরকতের কারণ এটি। রিজিক বৃদ্ধির অন্যতম উপায়।
রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি তার জীবিকা প্রশস্ত করতে চায় এবং আয়ু বাড়াতে চায় সে যেন আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করে।’ (বুখারি, হাদিস : ৫৯৮৫)
তওবা ও ক্ষমা প্রার্থনা
আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করলে, তিনি গুনাহ মাফ করেন। বিপদাপদ দূর করেন। সফলতা-সচ্ছলতা দেন। জীবনে সমৃদ্ধি ও কল্যাণ দান করেন।
আল্লাহ তাআলা বলেন—
এরপর আমি বলেছি, তোমরা তোমাদের পালনকর্তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো। তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল। তিনি তোমাদের ওপর প্রচুর বৃষ্টি বর্ষণ করবেন। বাড়িয়ে দেবেন তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি। স্থাপন করবেন তোমাদের জন্য উদ্যান। প্রবাহিত করবেন তোমাদের জন্য নদীনালা।
(সুরা নুহ, আয়াত : ১০-১২)
দান-সদকা ও বদান্যতা
সদকা ও দান-বদান্যতার বিকল্প নেই। এসব কখনো বিফলে যায় না। উপরন্তু দান-সদকা সম্পদ বৃদ্ধির মাধ্যম। আল্লাহর পথে ব্যয় করলে, আল্লাহ বহুগুণ বাড়িয়ে বিনিময় দেন।
আল্লাহ তাআলা বলেন—
বলুন, নিশ্চয় আমার রব তার বান্দাদের মধ্যে যার জন্য ইচ্ছা রিজিক প্রশস্ত করেন এবং সঙ্কুচিত করেন। আর তোমরা যা কিছু আল্লাহর জন্য ব্যয় করো, তিনি তার বিনিময় দেবেন। তিনিই উত্তম রিজিকদাতা।
(সুরা সাবা, আয়াত : ৩৯)
সুরা ওয়াকিয়া তেলাওয়াত
পবিত্র কোরআনের ৫৬ নম্বর সুরা। এই সুরা ফজিলতপূর্ণ ও বরকতময়। এই সুরা দৈনন্দিন রাতে পাঠ করলে জীবনে বরকতের ছোঁয়া লাগে। সচ্ছলতা ও প্রাচুর্য আসে। রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি প্রতি রাতে সুরা ওয়াকিয়া পাঠ করবে, সে কখনো অভাব-অনটনে পড়বে না।’ (মিশকাতুল মাসাবিহ, হাদিস : ২১৮১)
বিয়ে-বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া
বিয়ের মাধ্যমে অভাব-অনটন দূর হয়। সংসারে সচ্ছলতা ও প্রাচুর্য আসে। আল্লাহ তাআলা বিয়ের ব্যাপারে উৎসাহ দিয়ে বলেন, ‘আর তোমরা তোমাদের মধ্যকার অবিবাহিত নারী-পুরুষ ও সৎকর্মশীল দাস-দাসীদের বিয়ের ব্যবস্থা করে দাও। তারা অভাবী হলে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদের অভাবমুক্ত করে দেবেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময় ও মহাজ্ঞানী।’ (সুরা নুর, আয়াত : ৩২)