বেসরকারি মোবাইল অপারেটর কোম্পানি রবি আজিয়েটা লিমিটেডের বিরুদ্ধে আঙুলের ছাপ ও রি-রেজিস্ট্রেশন অকার্যকরের অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি চট্টগ্রামে আঙুলের ছাপ দিয়ে রি-রেজিস্ট্রেশন করা বৈধ সিম জালিয়াতি করে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারক চক্র। আর এর সঙ্গে রবির একশ্রেণির অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশ রয়েছে বলেও জানা গেছে।
চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার রোববার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সাতকানিয়া থানার রঙ্গিপাড়া এলাকার বাসিন্দা নুরুন্নাহার নামের এক নারীর অভিযোগের ভিত্তিতে সিম জালিয়াতির বিষয়টি জানতে পারে পুলিশ। পরে প্রতারণায় জড়িত থাকায় কুতুব উদ্দিন ও মো. ফরহাদ নামে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়।
নুরুন্নাহারের অভিযোগ, গত ২১ এপ্রিল তার নামে নিবন্ধিত রবি সিমটি হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়। সিমটি দিয়ে বিকাশে টাকা লেনদেন করতে তিনি। সিম বন্ধের কারণ জানতে নুরুন্নাহার সাতকানিয়ায় রবি সেবা কেন্দ্রে গেলে বলা হয়, অন্য আরেকজন সিমটি তুলে নিয়েছে।
নুরুন্নাহার পুলিশকে বলেন, বৈধ মালিক হিসেবে পুনরায় ওই সিম তুলে বিকাশ ব্যালেন্স চেক জানতে পারেন অ্যাকাউন্টে থাকা ২০ হাজার ৪০০ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারক চক্র।
পরে এ বিষয়ে সাতকানিয়া থানায় অভিযোগ করা হলে পুলিশ সিম তোলার সময় ব্যবহৃত জাতীয় পরিচয় পত্রের নম্বর নিয়ে কুতুব উদ্দিন ও মো. ফরহাদ নামে দুজনকে গ্রেফতার করে।
শুধু নুরুন্নাহারের নয়, চট্টগ্রামে মোবাইল ফোন অপারেটর রবির ‘বায়োমেট্রিক’ পদ্ধতিতে রি-রেজিস্ট্রেশনকৃত সিমের বৈধ মালিক ছাড়া অন্য কেউ তুলে তা দিয়ে অর্থ জালিয়াতির ভয়াবহ তথ্য পাওয়া গেছে।
চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার একেএম হাফিজ আক্তার জানান, শুধু রবি থেকেই আঙুলের ছাপে নিবন্ধন করা ১৫৭টি সিম তুলে গ্রেফতার ওই দুই প্রতারক জালিয়াতি করেছে।
গ্রেফতার কুতুব ও ফরহাদ আগে মোবাইল সিম নিবন্ধন, সিম বিক্রি ও বিকাশের অ্যাজেন্ট ছিলেন। ‘বায়োমেট্রিক’ পদ্ধতিতে রি-রেজিস্ট্রেশনকৃত সিম বৈধ মালিক ছাড়া অন্য কেউ তুলে এ ধরনের ভয়াবহ জালিয়াতির ঘটনায় খোদ পুলিশও বিস্ময় প্রকাশ করেছে।
এদিকে, এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন রবির কমিউনিকেশন ম্যানেজার আশিকুর রহমান।
তিনি জাগো নিউজকে বলেন, বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধিত সিম প্রকৃত মালিক ছাড়া কোনোভাবেই পুনরায় উত্তোলন সম্ভব নয়। কেউ বিশেষ উদ্দেশ্যে এসব গল্প বানাতে পারেন।
বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালু হওয়ায় এখন আর আঙুলের ছাপ না দিয়ে সিম কেনা বা নিবন্ধন সম্ভব হওয়ার কথা নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
উল্লেখ্য, সরকারের নির্দেশনা থাকেলেও বায়োমেট্রিক তথ্য চুরি করে অপব্যবহারের সুযোগ তৈরি হতে পারে এমন আশঙ্কায় জনমনে উদ্বেগ ছিল। এ নিয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদনও হয়েছিল। তবে সরকারের পক্ষ থেকে বরাবরই জনগণকে আশ্বস্ত করে বলা হয়, তথ্য চুরি ঠেকানোর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এছাড়া গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি হলে অপারেটরকে জরিমানাও গুণতে হবে বলেও জানানো হয়। সুত্র জাগো নিউজ
পাঠকের মতামত