মিয়ানমারের সংঘাত কবলিত রাখাইন রাজ্যের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহরগুলো থেকে সরকারি কর্মীদের সরিয়ে নিচ্ছে জান্তা। রাজ্যটিতে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সঙ্গে লড়াই তীব্র হওয়ার ফলে থান্ডওয়ে ও নগাপালি শহর থেকে কর্মীদের সরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সামরিক সরকার। স্থানীয়দের বরাতে মিয়ানমার বিষয়ক সংবাদমাধ্যম ইরাবতী এ খবর জানিয়েছে।
সূত্রের বরাতে খবরে বলা হয়েছে, প্রায় এক সপ্তাহ ধরে থান্ডওয়ে শহর থেকে সরকারি কার্যালয়ের আসবাবপত্র, যন্ত্রপাতি ও নথিসহ কর্মীদের সরিয়ে নিচ্ছে শাসক গোষ্ঠী। শহরটি থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে বিদ্রোহীদের সঙ্গে সেনাদের সংঘর্ষ চলছে। থা হতায় চাউং জলবিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে গাড়ি ও মেশিন ইয়াঙ্গুন নেওয়া হচ্ছে।
থান্ডওয়ে-ইয়াঙ্গুন সড়কে বসবাসকারী একটি সূত্র ইরাবতীকে বলেছে, বড় ও ছোট আকারের গাড়িতে করে প্রতিদিন ইয়াঙ্গুনে আসবাবপত্র নেওয়া হয়েছে। ভেকুও পরিবহন করছে ট্রাকগুলো। বেশ কয়েকটি ট্রাক অনেক বড় ছিল। এমন আকারের ট্রাক আমি কখনও দেখিনি। এগুলো প্রতিদিন ইয়াঙ্গুন যাচ্ছে।
থান্ডওয়ের এক বাসিন্দা বলেছেন, জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের যন্ত্রপাতি ও সরকারি কর্মীদের একটি ধর্মীয় সমাবেশ কেন্দ্রে রাখা হচ্ছে। এগুলোকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। আমি তাদেরকে গাড়ি চালিয়ে ইয়াঙ্গুন যেতে দেখেছি। এখন পর্যন্ত ভারি যন্ত্রপাতির ৪৮টি ইউনিট দেখেছি এবং আরও যাচ্ছে।
থান্ডওয়ের বাসিন্দা বলেছেন, অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে রাখাইনকে সংযুক্তকারী তিনটি রুটের মধ্যে একেবারে দক্ষিণাঞ্চলীয় সড়কটি ব্যবহার করা হচ্ছে। এটি রাখাইন পাহাড়ের মধ্য দিয়ে এগিয়েছে। সেনা ফাঁড়িতে সরকারি কর্মীদের বহনকারী গাড়ি ও বেসরকারি গাড়িকে দিনের আলোতে যাতায়াতের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।
থান্ডওয়ে শহরের সরকারি কর্মীদের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র বলেছে, আমি শুনতে পেয়েছি থান্ডওয়েতে থাকা সরকারি নথির প্রায় অর্ধেক কিয়েনতালিতে রাখা হয়েছে। কয়েকটি অধিদফতরের গোপন বৈঠক হয়েছে। তাদেরকে বলা হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ নথিগুলো নিজেদের সঙ্গে রাখতে।
নগাপালি শহরের কয়েকটি শাখা ও ওয়ার্ড প্রশাসনের কার্যালয় বন্ধ করা হয়েছে। শহরটির এক বাসিন্দা বলেছেন, আমি শুনেছি গুরুত্বপূর্ণ নথিগুলো সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। কার্যালয় বন্ধ করা হয়েছে। আমরা জানি না কেন এমন করা হচ্ছে।
১৩ এপ্রিল থান্ডওয়েতে সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত বিদ্রোহীদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর অন্তত দশবার লড়াই হয়েছে। এই বিষয়ে রাখাইন রাজ্যের জান্তা মুখপাত্রের মন্তব্য পায়নি ইরাবতী।
সম্প্রতি রাখাইনের গুরুত্বপূর্ণ শহর বুথিডাউং দখল করেছে আরাকান আর্মি। গত বছর নভেম্বরের পর থেকে এখন পর্যন্ত রাখাইনের গুরুত্বপূর্ণ ১৭টির মধ্যে ৭টির শহর দখল করেছে বিদ্রোহীরা।