আশ্রয়ের খোঁজে রোহিঙ্গারা ► সীমান্তে সতর্ক বিজিবি
রাখাইনের বুচিডংয়ে ব্যাপক সংঘর্ষ
সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের বুচিডংয়ে জান্তা অনুগত সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহী আরাকান আর্মির মধ্যে গতকাল শুক্রবার ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এতে অনেক হতাহতের আশঙ্কা করা হচ্ছে। মিয়ানমার থেকে পাওয়া খবরে জানা গেছে, গতকাল ভোর থেকে রাখাইনের (আরাকান) বুচিডংয়ের ফুমালি গ্রামে ওই সংঘর্ষ বাধে। ওই গ্রামটি রোহিঙ্গা অধ্যুষিত।
সংঘর্ষে অনেক রোহিঙ্গা হতাহত হয়েছে। সেখানে মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর ‘৫৫১ লাইট ইনফ্যান্ট্রি ব্যাটালিয়নের (এলআইবি ৫৫১)’ সঙ্গে সংঘর্ষের এক পর্যায়ে আরাকান আর্মি ফুমালি গ্রামে আশ্রয় নেয়। সে সময় মিয়ানমার বাহিনী ওই গ্রাম লক্ষ্য করে আর্টিলারি গানসহ ভারী অস্ত্রের গোলা ছুড়তে থাকে।
ওই সময় সংঘর্ষে শতাধিক রোহিঙ্গা হতাহত হয়েছে। আহত রোহিঙ্গাদের বুচিডং হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিহতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। রাখাইনের সূত্রগুলো জানায়, রোহিঙ্গারা নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে অন্যত্র যাওয়ার চেষ্টা করছে।
অনেকে বাংলাদেশে আসার চেষ্টা করছে। ২০১৭ সালে নিপীড়নের সময় রাখাইনের বুথিডং থেকে অনেক রোহিঙ্গা আশ্রয়ের খোঁজে বাংলাদেশে এসেছিল।
রাখাইন থেকে নির্বাসিত গণতন্ত্রপন্থী কর্মীদের মাধ্যমে পরিচালিত সংবাদমাধ্যম নারিনজারা নিউজে গতকাল সচিত্র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিতুয়েতে সংঘাতের আশঙ্কায় অনেক বাসিন্দা রাখাইন রাজ্য ছেড়ে মিয়ানমারের সাবেক রাজধানী ইয়াংগুনে আশ্রয় নিচ্ছে। এয়ারলাইনস সেবা সংস্থাগুলো বলছে, আগামী মার্চের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত সব এয়ারলাইনসের টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। কয়েক মাস ধরে সশস্ত্র প্রতিরোধের মুখে মিয়ানমারের জান্তা একের পর এক এলাকার নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে।
জান্তা অনুগত সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে রাখাইনে লড়াই করছে আরাকান আর্মি নামে একটি সশস্ত্র গোষ্ঠী। গত বুধবার আরাকান আর্মি রাখাইন রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ বন্দরনগর পকতাওয়ের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার ঘোষণা দেয়। এরপর সেখানে আবারও নিয়ন্ত্রণ নিতে জান্তা অনুগত সামরিক বাহিনী বোমা বর্ষণ ও লড়াই করছে।
এদিকে মিয়ানমার সীমান্ত এলাকার বাংলাদেশ অংশের লোকজন জানায়, গত সোমবার থেকে পশ্চিম রাখাইনে শুরু হওয়া গোলাগুলিতে সীমান্তের এপারে তমব্রু এলাকার বাসিন্দারা আতঙ্কে রয়েছে। সীমান্ত এলাকা থেকেই বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। এ বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাকারিয়া সাংবাদিকদের বলেন, সীমান্তের ওপারে মিয়ানমার অংশে গোলাগুলির প্রভাব এপারে থাকাটা স্বাভাবিক। তবে বিজিবি, গ্রাম পুলিশ ও জনপ্রতিনিধিরা সতর্ক রয়েছেন। ৩৪ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্নেল সাইফুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, বিজিবি সব সময় সতর্ক আছে। তিনি বলেন, সীমান্তে বসবাসরত গ্রামবাসীকে নিরাপদে রাখতে বিজিবি সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। তারা রাত-দিন কাজ করছে। সুত্র: কালেরকন্ঠ
পাঠকের মতামত