উত্তপ্ত পরিস্থিতিতেই মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের রামরি শহরে জান্তা বাহিনীর প্রায় ৮০ সেনাকে হত্যা করেছে দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। তিন দিনের এসব সেনা সদস্য নিহত হয়েছেন বলে তারা দাবি করেছে।
থাইল্যান্ড ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ইরাবতী জানিয়েছে, রাখাইনে আরাকান আর্মির সঙ্গে লড়াইয়ের জন্য শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রামরিতে নতুন করে সেনা পাঠায় জান্তা সরকার। সেদিন চারটি সামরিক হেলিকপ্টারে করে মোট ১২০ সেনা সদস্য রামরিতে আসেন। আর আরাকান আর্মির দাবি করেছে, দুইদিনে এসব সৈন্যের তিন ভাগের দুই ভাগই নিহত হয়েছেন।
এএ বলছে, শনিবার রামরিতে আসা সেনাদের প্রায় ৬০ জন তাদের সঙ্গে লড়াইয়ে নিহত হন। এসব সেনার মরদেহ উদ্ধার করার সময় তারা বিপুল অস্ত্র ও গোলাবারুদও জব্দ করেছে। পরে সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রামরি দ্বীপ থেকে পিছু হটার সময় তাদের সঙ্গে লড়াইয়ে জান্তা বাহিনীর আরও ২০ সেনা নিহত হন। তাদের কাছ থেকেও গোলাবারুদ ও খাদ্যসামগ্রী জব্দ করা হয়।
মূলত রামরি শহরে জান্তা বাহিনী ও বিদ্রোহীদের সশস্ত্র লড়াই শুরু হয় গত বছরের ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি। শহরটিতে জান্তা বাহিনীর অবস্থান লক্ষ্য করে আরাকান আর্মি হামলা করার পর এ লড়াই শুরু হয়। আরাকান আর্মি বলছে, এরপর থেকে শহরটিতে বিদ্রোহীদের অবস্থান নিশানা করে জল, স্থল ও আকাশপথে বোমা হামলা চালাচ্ছে জান্তা বাহিনী। জান্তার হামলায় শহরটির অনেক বাড়িঘর ধসে পড়েছে। এছাড়া শহরের একটি হাসপাতাল ও বিপণিবিতানও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এদিকে রাখাইনের পনাগিউন, মংডু ও বুথিডং শহরে নিয়ন্ত্রণ নিতে জান্তা বাহিনীর ওপর হামলা অব্যাহত রেখেছে আরাকান আর্মি। তারা বলছে, রাখাইনে একের পর এক এলাকা ও সেনাচৌকির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে জান্তা বাহিনী এখন বেসামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে।
অন্যদিকে আরাকান আর্মির প্রধান মেজর জেনারেল তুন মিয়াত নাইং রাখাইনে পরাজয় স্বীকার করতে মিয়ানমারের জান্তা প্রধান মিন অং হ্ল্যাইং ও তার অনুগত জেনারেলদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। একইসঙ্গে নিরস্ত্র সাধারণ মানুষের ওপর হামলা বন্ধ করার আহ্বানও জানান তিনি। এক্সে করা এক পোস্টে তুন মিয়াত নাইং লিখেছেন, ‘আপনাদের সামরিক দক্ষতা ও কঠোর পরিশ্রমকে আমি সম্মান জানাই। তবে আপনারা নিশ্চিতভাবেই এ যুদ্ধে পরাজিত হবেন। ভালোয় ভালোয় পরাজয় মেনে নেয়াটাই হবে আপনাদের জন্য সর্বোত্তম উপায়।’ সুত্র: বিডিটোয়েন্টিফোর লাইভ ডটকম