চুরি করা মোবাইল ফোনগুলোর আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করে এবং মোবাইল ফোনের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ খুলে স্বল্পমূল্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করত একটি চোর চক্র। এছাড়াও চোরাই ফোন-ল্যাপটপগুলো কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে পাঠানো হতো কক্সবাজার।
২৯ মার্চ বুধবার থেকে ৩১ মার্চ শুক্রবার পর্যন্ত বিশেষ অভিযান চালিয়ে ঢাকা ও কক্সবাজার থেকে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপ চুরির ঘটনায় চোর চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কলাবাগান থানা পুলিশ।
গ্রেপ্তাররা হলেন: নুর ইসলাম ও আবু বরকত মিশকাত। এসময় তাদের হেফাজত থেকে ৪টি আইফোন, ৩৮টি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মোবাইল ফোন ও ৩টি ল্যাপটপ উদ্ধার উদ্ধার করা হয়।
রোববার ২ এপ্রিল দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন ডিএমপির রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. শহিদুল্লাহ।
তিনি বলেন, কলাবাগানের একটি বাসা থেকে গত ২৭ মার্চ ভোরে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ৩৮টি মোবাইল, ৪টি আইফোন ও ল্যাপটপসহসহ নগদ ১ লাখ ৫৬ হাজার টাকা চুরি হয় । যার সর্বমোট চোরাই মূল্য ৫ লাখ ৬১ হাজার টাকা। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী কলাবাগান থানায় মামলা করেন। এরপর কলাবাগান থানার একটি টিম চোরাই মালামাল উদ্ধার ও চোর চক্রকে গ্রেপ্তারে জন্য কাজ শুরু করেন।
সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় চুরির ঘটনায় সরাসরি জড়িত চোরদের শনাক্ত করা হয়। এরপর ২৯ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে রাজধানী ঢাকা ও কক্সবাজার জেলার চকরিয়া এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।
তিনি আরো বলেন, গ্রেপ্তাররা সংঘবদ্ধ চোর চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা পরষ্পরের যোগসাজসে রাজধানী ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে বিভিন্ন উপায়ে মোবাইল, ল্যাপটপ চুরি করে তাদের অন্যান্য সহযোগিদের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠাতো।
জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তাররা আরোও জানায়, তারা চোরাই মোবাইল ফোনগুলোর আইএমআই নম্বর পরিবর্তন করে এবং মোবাইল ফোনের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ খুলে স্বল্পমূল্যে অন্যত্র বিক্রি করে। এছাড়া তারা অধিকাংশ সময় কুরিয়ারের মাধ্যমে চোরাই মোবাইল কক্সবাজার পাঠিয়ে দিতো।
রাজধানীতে চোরাই জিনিসপত্র বিক্রির কোনো স্থান রয়েছে কিনা জানতে চাইলে ডিসি বলেন: রাজধানীতে আমরা এমন কোনো স্থান পাইনি। চোরচক্র রাজধানীর চেয়ে রাজধানীর বাইরে চোরাই জিনিসগুলো পাঠিয়ে দেয়। রাজধানীতে মানুষ সচেতন হওয়ায় চোরাই জিনিসপত্র তেমন কিনে না। তাই চোরচক্রের সদস্যরা রাজধানীর বাইরে পাঠিয়ে দেয়। গ্রামের মানুষ একটি মোবাইল কম দামে কিনে নিতে পারে। তারা সাধারণত খোঁজ নেয় না কোথা থেকে মোবাইলটা এসেছে।
চোরাই মোবাইল বা কোনো জিনিস কেনার আগে যাচাই করে কেনার আহ্বান জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
পাঠকের মতামত