রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আন্তঃবিভাগ ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে শিক্ষককে হেনস্তা ও গায়ে হাত তোলার অভিযোগ উঠেছে আইবিএ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আবু সিনহা সৌমিকের বিরুদ্ধে।
রবিবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের হবিবুর রহমান হল মাঠে ব্যবসায় প্রশাসন ইন্সটিটিউট (আইবিএ) ও ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সায়েন্সেস বিভাগের আন্তঃবিভাগ ফুটবল খেলায় এ ঘটনা ঘটে। এসময় সংঘর্ষে শিক্ষকসহ উভয়পক্ষের অনেকেই আহত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীর মতে, বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তঃবিভাগ ফুটবল খেলায় ইন্সটিটিউট অব বিজনেস এডমিনিস্ট্রেট (আইবিএ) ও ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সায়েন্সেস বিভাগের মধ্যকার খেলা ড্র হয়। পরবর্তীতে পেনাল্টি শটেও ২ গোলে ড্র হয়। এসময় রেফারি উভয়পক্ষকে একটি করে অতিরিক্ত শট দেয়ার অনুমতি দেন। তখন ভেটেরিনারি বিভাগের এক শিক্ষার্থী রেফারি বাঁশি বাজানোর পূর্বেই শট করে ফেললে সেটা আইবিএ'র গোলকিপার ঠেকিয়ে দেন। কিন্তু রেফারি পুনরায় শট নেয়ার কথা বললে তখন আইবিএ শিক্ষার্থীরা রেফারি ওপর চড়াও হন।
একপর্যায়ে উভয়পক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটলে ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সায়েন্সেস বিভাগের অধ্যাপক ড. মোইজুর রহমান কথা বলতে এগিয়ে আসলে তাকে আইবিএ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আবু সিনহা সৌমিক শার্টের কলার চেপে ধরেন এবং টেনে হিঁচড়ে অন্য পাশে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে বিভাগের শিক্ষার্থী শাহেলাব হোসেন টুটুল, উৎপল, আবু নাঈম তন্ময়সহ এক ছাত্রী প্রতিবাদ জানালে তাদেরকেও সিনহার নেতৃত্বে মারধর ও হেনস্তা করা হয়। এক পর্যায়ে শিক্ষক ও আহত শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করে কৃষি অনুষদে নিয়ে আসেন সাথে থাকা অন্যান্য শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষকের গায়ে হাত তোলার ঘটনায় অভিযুক্ত আবু সিনহা সৌমিকসহ কয়েকজনের স্থায়ী বহিষ্করের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সায়েন্সেস বিভাগের শিক্ষার্থীরা। বেলা ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদ ভবনে তালা লাগিয়ে দিয়ে বিচারের দাবি জানান তারা। যদি উপযুক্ত শাস্তির আওতায় না আনা হয় তাহলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ার দেন আন্দোলনকারীরা। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা ও ছাত্র উপদেষ্টা তারেক নূর উপস্থিত হয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন স্থগিত করতে আশ্বস্ত করেন।
অভিযোগের বিষয়ে আইবিএ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আবু সিনহা (সৌমিক) বলেন, 'ওদেরকে মারধরের ঘটনা সম্পূর্ণ মিথ্যা। ওরাই আমাদেরকে মেরেছে আমার শার্ট ছিঁড়ে ফেলেছে, গায়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এছাড়াও আমাদের আইবিএর চারজন শিক্ষার্থী রাহাত,সৈকত, জাওয়াদ, আকিব ওরা হাসপাতালে ট্রিটমেন্ট নিচ্ছে।'
ভুক্তভোগী ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল
সায়েন্সেস বিভাগের ড. মোইজুর রহমান বলেন, আমি ঝামেলা দেখে রেফারির কাছে সমাধানের জন্য গেলে সৌমিক নামের আইবিএর এক শিক্ষার্থী আমার গলার কলার ধরে টানতে থাকে। আমি শিক্ষক পরিচয় দেওয়ার পর আমাকে গলার কলার ছাড়েনি। এদিকে আমার বিভাগের কিছু শিক্ষার্থী যারা আমাকে ওদের হাত থেকে মুক্ত করে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. আসাবুল হক বলেন, আমরা ইতোমধ্যে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে প্রতিবেদন জমা দিবেন তারা। ঘটনায় যারা অভিযুক্ত প্রমাণিত হবেন তাদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
রাবি প্রতিনিধি