সোয়েব সাঈদ, রামু
রামুতে চলন্ত অবস্থায় অটোরিক্সা থেকে লাফিয়ে পড়ে অপহরণকারি চক্রের কবল থেকে নিজেকে রক্ষা করেছে এক উপজাতীয় কিশোরী। এতে ক্ষত-বিক্ষত হয়ে গেছে কিশোরীর মুখ সহ শরীরের বিভিন্ন অংগ। গতকাল বৃহষ্পতিবার রাত সাড়ে আট টায় রামুর মধ্যম মেরংলোয়া এলাকায় আরাকান সড়কে এ ঘটনা ঘটে।
হতভাগা কিশোরী হ্লা নু প্রু চাক পাবর্ত্য বান্দরবান জেলা পরিষদের সদস্য ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা আওয়ামীলীগের আহবায়ক কাউচিং চাক এর মেয়ে বলে জানা গেছে। আহত কিশোরীকে স্থানীয়রা মূমুর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে রামু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করিয়েছে।
আহত কিশোরী হ্লা নু প্রু চাক ও তার খালু উচাই হ্লা চাক এর সাথে কথা বলে জানা গেছে, কিশোরী হ্লা নু প্রু চাক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা শেষে খালু উচাই হ্লা চাক এর সাথে বাড়ি ফিরছিলেন। রাত আটটার দিকে তারা রামু চৌমুহনী স্টেশনের নেমে সেখান থেকে নাইক্ষ্যংছড়ি যাওয়ার জন্য একটি অটোরিক্সা ভাড়া করেন। এসময় কিশোরী হ্লা নু প্রু চাক কে সিএনজি গাড়িতে রেখে পার্শ্ববর্তী দোখানে পান আনতে যান খালু খালু উচাই হ্লা চাক। এরই ফাঁকে সিএনজি চালক ওই কিশোরী মেয়েকে অপহরণের উদ্দেশ্যে গাড়িযোগে দ্রুত সটকে পড়েন। খালুকে ছাড়াই গাড়ি চলতে থাকায় হতভম্ব হয়ে পড়েন কিশোরী ছাত্রীটি। একপর্যায়ে দ্রুতগামি গাড়িটি রামুর মেরংলোয়া এলাকায় একটি গতিরোধক (স্পিড বেকার) পার হওয়ার সময় নিজেকে রক্ষার উদ্দেশ্যে চলন্ত গাড়ি থেকে লাফ দেন হ্লা নু প্রু চাক। এসময় অবস্থা বেগতিক দেখে খালি গাড়ি নিয়ে চালক চলে গেলে স্থানীয় লোকজন মেয়েটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।
জানা গেছে, মেয়েটিকে অপহরণের চেষ্টাকারি সিএনজি চালকের নাম মিজান। তার বাড়ি রামু উপজেলার কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের আবদুচ সালাম মেম্বারের মসজিদের পাশে। তবে তার বিস্তারিত পরিচয় জানা যায়নি।
রামু উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রিয়াজ উল আলম জানান, বিষয়টি দুঃখজনক। আহত ছাত্রীটির বাবা বিষয়টি তাকে জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে জড়িত চালকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে তিনি প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন। সেই সাথে আহতের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে তিনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানিয়েছেন।
আহত ছাত্রীর পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, অপহরণকারি গাড়ি চালক ওই ছাত্রীর এসএসসি, এইচ,এসসি সহ বিভিন্ন পরীক্ষার মূল সনদ, মোবাইল ফোন সেট, নগদ টাকা সহ বেশ কিছু মালামাল নিয়ে গেছে।
এদিকে এ ঘটনার খবর পেয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি থেকে রামু হাসপাতালে ছুটে আসেন নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতা আবু তাহের কোম্পানী, উগ্য মং চাক, রামু উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক সুবীর বড়–য়া বুলু, রামুর যুবলীগ নেতা মাসুদুর রহমান মাসুদ, শিক্ষক শিপন বড়–য়া সহ অনেকে। এ ঘটনায় সর্বত্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। এলাকাবাসী জড়িত সিএনজি চালককে দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।