রামুতে সড়ক ও জনপদ বিভাগ এবং উপজেলা প্রশাসনের অভিযানে শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। বুধবার, ১ জানুয়ারি সকাল দশটা থেকে বিকাল পর্যন্ত উপজেলা প্রাণকেন্দ্র চৌমুহনী স্টেশন এবং রাজারকুল ইউনিয়নের পাঞ্জেখানা এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়।
অভিযানে নেতৃত্ব দেন- রামু উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. সাজ্জাদ জাহিদ রাতুল এবং কক্সবাজার সড়ক ও জনপদ বিভাগের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী (সড়ক উপ-বিভাগ-২) মোস্তফা মুন্সী। অভিযান চলাকালে সার্বিক সহায়তায় ছিলেন- বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, রামু থানা পুলিশ ও রামু ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স এর সদস্যরা।
সকালে স্বপ্নপুরী রাস্তার মাথা থেকে শুরু হওয়া অভিযান বিকালে পাঞ্জেখানা বাজারে শেষ হয়। দিনব্যাপী অভিযানে সড়ক ও ফুটপাত দখল করে নির্মাণ করা দোকান-পাট, লোহার সিঁড়ি ও অন্যান স্থাপনা স্কেভেটর দিয়ে গুড়িয়ে দেয়া হয়। দুপুরে রাজারকুল ইউনিয়নের পাঞ্জেখানা বাজারের দক্ষিণ পাশে প্রভাবশালী দিদারুল আলম গং কর্তৃক সওজের জমি দখল করে নির্মানাধিন বিশাল পাকা স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। অভিযান চলাকালে বিপুল জনসমাগম চোখে পড়ে।
অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া রামু উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. সাজ্জাদ জাহিদ রাতুল জানিয়েছেন- দিনব্যাপী উচ্ছেদ অভিযানে চৌমুহনী স্টেশন, পাঞ্জেখানা বাজারসহ আশপাশের ছোট-বড় শতাধিক স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। জনস্বার্থে এ অভিযান ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে। উচ্ছেদকৃত স্থাপনা আবারও স্থাপনের চেষ্টা হলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কক্সবাজার সড়ক ও জনপদ বিভাগের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী (সড়ক উপ-বিভাগ-২) মোস্তফা মুন্সী জানিয়েছেন- দীর্ঘদিন অভিযান না করার কারণে রামুর বিভিন্ন স্থানে সওজ এর জমি জবরদখলকারির দোকান-পাটসহ নানান স্থাপনা নির্মাণ করেছে। এ কারণে জনসাধারণ ভোগান্তির শিকার হয়ে আসছিলো।
রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রাশেদুল ইসলাম জানিয়েছেন- চৌমুহনী স্টেশনসহ আশপাশের সড়কের দু’পাশে অবৈধ দখলের কারণে জনজীবন অতিষ্ঠ ছিলো। চৌমুহনীতে সবসময়ই জ্যাম লেগে থাকাই যেন নিয়তি। শুধু রামু চৌমুহনী নয়, পাঞ্জেখানা বাজারসহ আনাঁচে কানাচেঁ দীর্ঘদিনের অবৈধ দখলের যেন মহোৎসব চলছিলো। তাই ভুক্তভোগীদের দাবির প্রেক্ষিতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে সহকারী কমিশনার (ভূমি), সওজ কক্সবাজার, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, ব্যাটালিয়ান আনসার ও বিদ্যুৎ বিভাগ এর সমন্বয়ে যৌথ অভিযানে অবৈধ দখল উচ্ছেদে এ অভিযান দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষার ফল। অভিযানে সার্বিক সহযোগিতার জন্য চৌমুহনী বণিক সমবায় সমিতি, সাংবাদিক, ছাত্র প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
রামু চৌমুহনী বণিক সমবায় সমিতি লিমিটেড এর সভাপতি রুহুল আমিন রকি জানিয়েছেন- উপজেলা প্রশাসন, সওজ, সেনাবাহিনী, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিসের এ যৌথ অভিযানে রামু চৌমুহনী স্টেশনটির অধিকাংশ দখলমুক্ত হয়েছে। এটি রামুবাসীর বহুল কাংখিত অভিযান। এ অভিযানের কারণে চৌমুহনী স্টেশনে যানজট নিরসন হবে। ফুটপাতেও নির্বিঘ্নে জনসাধারণ চলাচল করতে পারবে। তিনি এ ধরনের প্রশংসনীয় অভিযান পরিচালনা করায় উপজেলা প্রশাসন, সওজসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে।
নাইক্ষ্যংছড়ি হাজী এমএ কালাম সরকারি কলেজের ইংরেজি বিষয়ের প্রভাষক নীলোৎপল বড়ুয়া এ অভিযানের প্রশসংসা করে বলেন- দেরিতে হলেও এ অভিযান স্বস্তিদায়ক। অনেক দোকান মালিক সামনে ঝুপড়ি দোকান ও ফুটপাত দখল করে জনদূর্ভোগ সৃষ্টি করেছেন। এ অভিযানের ফলে দূর্ভোগ অনেকখানি কমে যাবে। তবে উচ্ছেদ হওয়া স্থাপনা যেন আবারও নির্মাণ না হয় সে ব্যাপারে প্রশাসন ও সওজকে সজাগ ভূমিকা রাখতে হবে।
পাঠকের মতামত