ঈদের তৃতীয় দিন সূর্য ওঠার সাথে সাথে পর্যটকদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে সাগরকন্যা কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত। মূলত পদ্মা সেতু হওয়ার পর থেকেই পর্যটক আগমনে অতীতের সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে যায় এবারের ঈদে। তবে পর্যটকদের পর্যাপ্ত ব্যবস্থাপনায় এখনও গড়ে উঠেনি।
মঙ্গলবার (১২ জুলাই) সকাল থেকে ঘুরে দেখা গেছে, আগত পর্যটকদের তুলনায় নেই পর্যাপ্ত হোটেল-মোটেল। খাওয়া- দাওয়ার দামেও বেপরোয়া গতি। নেই পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থাও। হোটেল ভাড়া ও খাবারের মূল্য অনেকটা বেশি রাখা হচ্ছে বলে অভিযোগ আগত দর্শনার্থীদের। শুধু তাই নয়, যেসকল থাকার হোটেল রয়েছে সেগুলোর ভাড়ায়ও আগুন।
সাধারণ যাত্রীদের অভিযোগ, সকাল থেকে বিভিন্ন জায়গা ঘুরেও থাকার জন্য হোটেল পাচ্ছে না। অনেককে দেখা যায় হোটেল না পেয়ে ব্যাগ নিয়ে ঘুরছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এখানকার ৮০ শতাংশ হোটেল অগ্রিম বুক করে রেখেছে আগত দর্শনার্থীরা। এর ফলে অনেকেই রুম পেতে ভোগান্তিতে পড়েছেন।
সকাল থেকেই দেখো গেছে, পর্যটকরা সৈকতের বালিয়ারীতে গাঁ ভাসিয়ে নেচে গেয়ে আনন্দ উন্মাদনায় মেতে উঠে। কেউ সৈকতের বেঞ্চে বসেই সমুদ্র ও প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করছেন। কেউবা আবার সৈকতের দোকানগুলোতে কাঁকড়া, চিংড়িসহ নানা ধরনের সামুদ্রিক মাছের ফ্রাই ও বার-বি-কিউ খাচ্ছেন।
দর্শনার্থীরা জানান, এখানে যদি হোটেল-মোটেল রিসোর্ট গড়ে উঠে; তাহলে তারা যেমন আর্থিকভাবে লাভবান হবেন ঠিক তেমনি দর্শনার্থীদেরও অনেকটা ভোগান্তি লাঘব ঘটবে।
তবে পর্যটকদের আগমনকে টার্গেট করে বেশকিছু খাওয়ার হোটেল থেকে শুরু করে বিভিন্ন মার্কেট গড়ে উঠছে।
ঢাকা থেকে থেকে থেকে ঘুরতে আসা পর্যটক সারা বশির দম্পতি জানান, এর আগেও আমরা কুয়াকাটায় ভ্রমণে এসেছি। ৭-৮টি ফেরিতে পার হয়েছে ১০-১২ ঘণ্টা। ফেরিঘাটে বসে থেকে, আজকে পদ্মা সেতু পার হয়ে আসলাম মাত্র ৬ ঘণ্টায়। তাও আবার এসে হোটেলে রুম পেতে অনেক কষ্ট হয়েছে। আমরা কক্সবাজারে বিভিন্ন ভ্রমণ পয়েন্ট দেখেছি, যেগুলো দর্শনার্থীদের সমুদ্রদর্শন আনন্দকে দ্বিগুণ বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু এখানে এখন পর্যন্ত দর্শকদের আনন্দ দেওয়া মত করে কোনও ভ্রমণ পয়েন্ট গড়ে উঠেনি। এ ছাড়াও পর্যাপ্ত টুরিস্ট পুলিশ দেখতে পাইনি।
ঢাকা থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত সড়কপথে কোনও বিড়ম্বনা না থাকা এবং কম সময়ে সাগরপাড়ে পৌঁছাতে পারায় পর্যটকদের একটি বড় অংশের দৃষ্টি এখন দক্ষিণমুখী। এসব পর্যটককে নিয়ে যেসব পরিবহন কুয়াকাটায় প্রবেশ করছে তারা পার্কিং সংকটে পড়ছেন। কুয়াকাটা পৌরসভার উদ্যোগে বাসস্ট্যান্ড নির্মাণাধীন থাকায় মহাসড়কেই দীর্ঘ সারিতে পার্কিং করতে হচ্ছে এসব যানবাহন।
এ সংকট কাটিয়ে উঠতে কেমন সময় লাগবে- এমন প্রশ্নের জবাবে কুয়াকাটা পৌরমেয়র মো. আনোয়ার হাওলাদার বলেন, নির্মাণ সম্পন্ন করতে একটু সময় লাগলেও চলতি বছরেই নির্মাণাধীন বাসস্ট্যান্ডের মধ্যে যাতে এই বছর সিজনে পার্কিং ব্যবস্থা করা যায় এমন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
কুয়াকাটা আগত পর্যটকদের জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজনে তুলাতুলীতে ২০ শয্যার সরকারি হাসপাতাল রয়েছে। হাসপাতালে কাগজকলমে তিন জন চিকিৎসক থাকলেও রোটেশন পদ্ধতিতে একজন দিয়ে চলছে বহির্বিভাগের চিকিৎসা।
এ প্রসঙ্গে পটুয়াখালী সিভিল সার্জন ডা. কবির হাসান বলেন, ২০ শয্যা হাসপাতাল হিসাবে স্বাভাবিক কার্যক্রম না থাকলেও জরুরি চিকিৎসায় দুজন ডাক্তার রয়েছেন। বর্তমানে পর্যটনকেন্দ্রের গুরুত্ব বৃদ্ধি পাওয়ায় কুয়াকাটা ২০ শয্যা হাসপাতালে লোকবলসহ আধুনিক চিকিৎসার যন্ত্রপাতি সংযোজনে আমরা কাজ করছি।
দেশের দক্ষিণের খ্যাতনামা পর্যটন খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী অন্তত ১০ জন বড় ব্যবসায়ীর। তারা কুয়াকাটায় মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়নে ধীরগতি সম্পর্কে ক্ষোভ জানিয়েছেন। এ বিষয়ে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন বলেন, মাস্টারপ্ল্যান কার্যকরে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের অপেক্ষায়। এ ছাড়া সম্ভাব্যতা যাচাই চলছে। কুয়াকাটা উন্নয়ন ক
পাঠকের মতামত