লাখ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী যখন বাংলাদেশের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে তখন তাদের আত্মীকরণের (অ্যাবজর্ব) পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকায় সফররত দুই মার্কিন কংগ্রেসম্যান এড কেইস ও রিচার্ড ম্যাককর্মিক।
রোববার (১৩ আগস্ট) বিকেলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠককালে তারা এই পরামর্শ দেন।
পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, বৈঠকে রোহিঙ্গা নিয়ে কথা হয়েছে। তারা বলেছেন, এই জনগোষ্ঠীর কাজকর্ম কিছুই নেই। আপনারা তাদের কাজকর্ম দেন, তাদের অ্যাবজর্ব (আত্মীকরণ) করে নেন।
তবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাদের এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি কংগ্রেসম্যানদের বলেছেন, সবচেয়ে বেশি ঘনবসতিপূর্ণ দেশ বাংলাদেশ। আমাদের এখানে প্রতিবছর গড়ে ২০ লাখ ছেলে-মেয়ে মার্কেটে আসছে। তাদের সবাইকে আমরা চাকরি দিতে পারি না। তারা বিদেশে গিয়ে কর্মী ভিসায় কাজ করেন। রোহিঙ্গাদের কীভাবে কাজ দেব?
মন্ত্রী বলেন, তারা নিজ দেশে ফেরত যেতে চায়। আমরাও চাই, তারা ফেরত যাক। আপনারাও কিছু নিয়ে যান। আপনারা বলেছিলেন, কিছু নেবেন। একটাও নেননি।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রাখাইন অঞ্চলে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্বিচারে হত্যা ও নির্যাতন শুরু করে৷ তখন সীমান্ত অতিক্রম করে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশের কক্সবাজারে এসে আশ্রয় নেয়৷ আগে থেকেই এখানে ছিল আরও কয়েক লাখ নিপীড়িত রোহিঙ্গা৷ ফলে সব মিলিয়ে এখানে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গার সংখ্যা বর্তমানে ১২ লাখের বেশি৷
মানবিক কারণে বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিলেও বর্তমানে বিশাল এই জনগোষ্ঠী নিয়ে বিপাকে পড়েছে সরকার। রোহিঙ্গাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে ফেরানোর চেষ্টা করেও তা সম্ভব হয়নি। আন্তর্জাতিক চাপে মিয়ানমার বারবার আশ্বাস দিলেও একজন রোহিঙ্গাকেও নিজ দেশে ফিরিয়ে নেয়নি। মানবিক বিবেচনায় আশ্রয় দেওয়া রোহিঙ্গারা এখন বাংলাদেশের জন্য বড় বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।