
বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) পাওয়ার প্রবণতা ঠেকাতে নতুন কৌশল গ্রহণ করতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ লক্ষ্যে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনের (ইউএনএইচসিআর) ডাটাবেইজ ব্যবহারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, বর্তমানে বাংলাদেশে ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বসবাস করছে। এদের মধ্যে অনেকেই অসাধু চক্রের মাধ্যমে অর্থের বিনিময়ে এনআইডি সংগ্রহের চেষ্টা করছে এবং কিছু রোহিঙ্গা এরই মধ্যে এনআইডি পেয়ে গেছে।
ইসি জানিয়েছে, যেসব রোহিঙ্গার এনআইডি পাওয়া ধরা পড়ছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তবে দীর্ঘমেয়াদে এই সমস্যা সমাধানে ইউএনএইচসিআরের কাছে থাকা রোহিঙ্গাদের আঙুলের ছাপভিত্তিক ডাটাবেইজ নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে যুক্ত করা গেলে অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করা সহজ হবে।
জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক এ এস এম হুমায়ুন কবীর বলেন, কিছুদিন আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা সেখানে বললাম, রোহিঙ্গাদের ডাটাবেইজ যদি পাওয়া যায় তাহলে সহজেই তাদের চিহ্নিত করা যাবে।
তিনি আরও বলেন, যে সময় রোহিঙ্গারা আমাদের এখানে এসেছিল, তখন জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার (ইউএনএইচসিআর) আঙুলের ছাপসহ রোহিঙ্গাদের একটি ডাটাবেইজ তৈরি করেছিল। সেটি আমাদের কাছে নেই। কিন্তু ইউএনএইচসিআরের কাছে আছে।
তিনি বলেন, আমরা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে অনুরোধ জানিয়েছি, ইউএনএইচসিআরকে বলে দেওয়ার জন্য। যাতে তারা আমাদের ডাটাবেইজ দেয়। এটি পেলে রোহিঙ্গা ভোটার হওয়ার ঝুঁকিটা কমে যাবে।
এনআইডি কার্যক্রমে রোহিঙ্গাদের অন্তর্ভুক্তি ঠেকাতে নাগরিকদের নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় নতুন ব্যবস্থা চালু করেছে ইসি। সন্দেহজনক আবেদনগুলোর ক্ষেত্রে বাবা-মায়ের পরিচয়পত্র, জন্ম নিবন্ধন, বাসস্থানের প্রমাণ ও অন্যান্য নথিপত্র পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই করা হচ্ছে। যদি কোনো আবেদনকারীকে সন্দেহজনক মনে হয়। তবে তার আবেদন বিশেষ কমিটির মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে নির্বাচন কমিশন চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি অঞ্চলকে বিশেষ এলাকা ঘোষণা করে। এসব এলাকায় ভোটার নিবন্ধনের ক্ষেত্রে আরও কঠোর নীতিমালা অনুসরণ করা হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের ভোটার হওয়ার চেষ্টায় জড়িত চক্রের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে ইসি।
পাঠকের মতামত