ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: ২৮/০৭/২০২৪ ১০:৩৪ এএম

হুমায়রা ও শারমিন আক্তার। দুজনই রোহিঙ্গা। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বাসিন্দা পরিচয়ে বাংলাদেশি পাসপোর্ট ব্যবহার করে গত ১১ জুন ভিয়েতনামে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তবে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন পুলিশের সন্দেহ হলে তাঁদের ফেরত পাঠানো হয়।

ওই ঘটনার চার দিন পর কুমিল্লা জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার (ডিএসবি) উপপরিদর্শক (এসআই) ইমাম হোসেন বাদী হয়ে চৌদ্দগ্রাম থানায় একটি মামলা করেন। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পান চৌদ্দগ্রাম থানার এসআই আলমগীর হোসেন। তদন্তের শুরুতে গত ২৭ জুন হুমায়রা ও শারমিনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

এরপরই বেরিয়ে আসে ওই দুই নারী কীভাবে বাংলাদেশি পাসপোর্ট তৈরি করে ভিয়েতনামে পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। তাঁরা চৌদ্দগ্রামের চিওড়া ইউনিয়নের ডিমাতলী গ্রামের বাসিন্দা কাজী খবীর উদ্দিনের মেয়ে পরিচয়ে তৈরি করেন ভুয়া জন্মসনদ। চিওড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সচিব রুহুল আমিন মজুমদার মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে তাঁদের জন্মসনদ পেতে সহযোগিতা করেন।

তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ডিমাতলী গ্রামের বাসিন্দা কাজী খবীর উদ্দিন ও চিওড়া ইউপির সচিব রুহুল আমিনের নেতৃত্বে ভুয়া জন্মসনদের একটি সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। এই সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন ধরে রোহিঙ্গাদের জন্মসনদ তৈরি করে দিচ্ছে। সেই সঙ্গে জাতীয় পরিচয়পত্র ও বাংলাদেশি পাসপোর্ট তৈরিতেও সহায়তা করে সিন্ডিকেটটি।

তদন্ত সূত্র আরও জানায়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেওয়া রোহিঙ্গা আইডি কার্ড অনুযায়ী, হুমায়রার বাবার নাম সামসু আলম। আর শারমিনের বাবার নাম নুর কামাল। অথচ গত বছরের ১০ ডিসেম্বর হুমায়রার নাম পরিবর্তন করে মাইমুনা আত্তার নাম দিয়ে নিজের মেয়ে দাবি করে চিওড়া ইউপি থেকে একটি জন্মসনদ তৈরি করেন কাজী খবীর উদ্দিন। একইভাবে শারমিন আক্তারকেও নিজের মেয়ে দাবি করে আরও একটি জন্মসনদ তৈরি করেন তিনি।

এর আগেও জন্মনিবন্ধনে বিভিন্ন অনিয়মের কারণে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সচিব রুহুলের আইডিটি একাধিকবার বন্ধ রেখেছিল। মুচলেকা দিয়ে তিনি আইডিটি ফিরে পান। এ ছাড়া রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে চেয়ারম্যানদের স্বাক্ষর জাল করে বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে।

ইউপি সচিব রুহুল আমিন মজুমদার বলেন, ‘কাজী খবীর উদ্দিন ও তাঁর স্ত্রীর জাতীয় পরিচয়পত্র এবং মেয়ে মাইমুনা আক্তারের এসএসসির প্রবেশপত্র অনুযায়ী জন্মসনদ দেওয়া হয়েছে। সে রোহিঙ্গা নারী কি না, আমার জানা নেই।’

পলাতক থাকায় কাজী খবীর উদ্দিনের বক্তব্য নেওয়া যায়নি।

চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি ত্রিনাথ সাহা বলেন, দালালচক্রের এক সদস্যসহ দুই রোহিঙ্গা নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তদন্তে যাঁরা দোষী হবেন, তাঁদের আইনের আওতায় আনা হবে।

ইউএনও মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ বলেন, ‘চিওড়া ইউপি সচিব রোহিঙ্গাদের জন্মসনদ দিচ্ছে—এমন অভিযোগ আপনাদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে

পাঠকের মতামত

হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশের মানুষের আবেগের বিরুদ্ধে গেছে ভারত: সারজিস

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে ভারত পুরো বাংলাদেশের মানুষের আবেগের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে বলে ...

সাতকানিয়ায় বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে প্রাণ গেল উখিয়ার কিশোরের

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় কেরানিহাট-বান্দরবান মহাসড়ক পার হওয়ার সময় সিএনজিচালিত অটোরিক্সার ধাক্কায় চলন্ত বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে ...