অনলাইন ডেস্ক - রাখাইন থেকে ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা নাগরিককে উচ্ছেদের পর এখন তাদের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে চাঁদা সংগ্রহে নেমেছে মিয়ানমার সরকার। এই চাঁদা সংগ্রহ চলছে দেশটির বিভিন্ন দূতাবাস থেকে। বিভিন্ন দেশে মিয়ানমার দূতাবাসের ওয়েবসাইটে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর দিয়ে রোহিঙ্গাদের জন্য চাঁদা আহ্বান করে নোটিশও দেওয়া হয়েছে।
রোববার (২ সেপ্টেম্বর) মিয়ানমারের দিল্লি দূতাবাসের ওয়েবসাইট ঘেঁটে দেখা যায়, সেখানে লাল কালিতে বড় অক্ষরে ‘অনুদান বা চাঁদা সংগ্রহ’ নামে একটি বিভাগ খোলা হয়েছে। সেখানে লেখা হয়েছে, ‘রাখাইন রাজ্য ইস্যুর সমস্যা সমাধানে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন। অতি ক্ষুদ্র পরিমাণ সাহায্যও নিচের যে কোনো একটি অ্যাকাউন্টে জমা দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হলো।’
রোহিঙ্গাদের সাহায্যের জন্য পাঁচটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের নম্বরও দেওয়া হয়েছে। মিয়ানমার ইকোনমিক ব্যাংকের দু’টি ও কেবিজেড ব্যাংকের তিনটি অ্যাকাউন্ট নম্বর উল্লেখ করা হয়েছে সেখানে। আলাদা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে মার্কিন ডলার, মিয়ানমারের মুদ্রা কিয়াত ও অন্য বৈদেশিক মুদ্রা জমা দেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।
দূতাবাসের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, সংগ্রহ করা অর্থ মিয়ানমারের ইউনিয়ন এন্টারপ্রাইজের মাধ্যমে রাখাইনে ব্যয় করা হবে। ইউনিয়ন এন্টারপ্রাইজ মিয়ানমারের একটি পাবলিক-প্রাইভেট কোম্পানি। এই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারাপারসন হলেন মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সুচি ও ভাইস চেয়ারম্যান দেশটির সমাজ কল্যাণ, ত্রাণ ও পুনর্বাসনমন্ত্রী ড. উইন মিয়াত আই।
ইউনিয়ন এন্টারপ্রাইজের প্রধানত তিনটি লক্ষ্য বলেও উল্লেখ করা হয়েছে, রাখাইন রাজ্যের জন্য মানবিক সহায়তা, পুনর্বাসন ও উন্নয়ন।
মিয়ানমার সরকারের মুখপাত্র জো হুতাই এর আগে একবার অভিযোগ করেছিলেন, ত্রাণ সহায়তা পাওয়ার জন্যই বাংলাদেশ রোহিঙ্গা ফেরত দিতে আগ্রহী নয়। তার ওই বক্তব্যের পর বিশ্বজুড়ে সমালোচনার মুখে পড়ে মিয়ানমার। তবে মিয়ানমার সরকার থেকে ওই বক্তব্য দেওয়ার পরেও দেশটি এখন রোহিঙ্গাদের জন্য চাঁদা সংগ্রহে নেমেছে। তাদের এই চাঁদা আদায়ের যৌক্তিকতা নিয়েও উঠেছে নানা প্রশ্ন। তবে এ নিয়ে ঢাকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কোনো কর্মকর্তা মুখ খুলতে রাজি হননি।
এদিকে রাখাইন থেকে রোহিঙ্গাদের বিতাড়িত হওয়ার পর ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এখানে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের সহায়তার জন্য বিপুল অঙ্কের অর্থের প্রয়োজন বলে জানিয়েছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা। চলতি বছর মার্চ মাসে জাতিসংঘ থেকে বলা হয়েছিল, শুধু ১০ মাসের জন্য রোহিঙ্গাদের সহায়তায় ৯৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রয়োজন।