বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য ৬.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে নরওয়ে। এ অর্থ রোহিঙ্গাদের দৈনন্দিন কার্যক্রমের জ্বালানি ও পরিবেশ বিষয়ক কর্মসূচিতে ব্যবহার করা হবে।
বুধবার (১০ মে) নরওয়ের জলবায়ু ও পরিবেশ মন্ত্রীর স্টেট সেক্রেটারি রানহিল্ড শুনার সিরস্টা রোহিঙ্গাদের জন্য এ অর্থ সহায়তার ঘোষণা দেন।
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর জানায়, বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য দৈনন্দিন কার্যক্রমের জ্বালানি ও পরিবেশ বিষয়ক কর্মসূচিতে নরওয়ে ৭০ মিলিয়ন ক্রোনা সহায়তা ঘোষণা করেছেন, যা ৬.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমতুল্য। এ পরিমাণ অর্থ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য পরিচ্ছন্ন জ্বালানি সরবরাহ, জীব বৈচিত্র্য ও বাস্তুতন্ত্রের অব্যাহত পুনর্বাসন, এবং শরণার্থী ও স্থানীয় বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের দক্ষতা উন্নয়নে সাহায্য করবে।
নিরাপদ জ্বালানি ও শক্তির জন্য এসব কর্মকাণ্ড জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও), জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা (আইওএম), জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর, ও বিশ্ব খাদ্য সংস্থার (ডব্লিউএফপি) যৌথ কার্যক্রম ‘সেফ অ্যাক্সেস টু ফুয়েল অ্যান্ড এনার্জি প্লাস, ফেইজ ২’ (সেফ+২) এর আওতাধীন।
রানহিল্ড শুনার সিরস্টা বলেন, ২০১৯ সালে চালু হওয়ার পর থেকেই সেফ প্লাস প্রোগ্রামে আর্থিক সাহায্য দিয়ে আসছে নরওয়ে। এ কর্মসূচিটি শরণার্থীদের জীবনমান উন্নয়নের পাশাপাশি পরিবেশের ওপর যে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে, তা চমৎকার।
তিনি বলেন, বৃক্ষ রোপণ ও পুনঃবনায়নের মাধ্যমে যেভাবে এই কর্মসূচির হাত ধরে সবুজ ফিরে আসছে, সেটা আমাদের অনুপ্রেরণা যোগায়। আমি আনন্দিত যে আমাদের অনুদানে শরণার্থীদের জন্য রান্নার পরিচ্ছন্ন জ্বালানির ব্যবস্থা করা যাবে। পাশাপাশি স্থানীয় পরিবেশ পুনরুদ্ধারের কাজ চলবে; যার উপকার পাবে শরণার্থী ও তাদের আশ্রয় দানকারী স্থানীয় জনগণ। রান্নার জন্য নিরাপদ জ্বালানি না থাকলে বনাঞ্চল আবারও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এটা রোধ করা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
এ প্রোগ্রামের সঙ্গে জড়িত জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর পক্ষে ইউএনএইচসিআরের বাংলাদেশে নিযুক্ত প্রতিনিধি (রিপ্রেজেন্টেটিভ) ইয়োহানেস ভন ডার ক্লাও বলেন, নরওয়ে সরকার ও এর জনগণের এই অনুদানের মাধ্যমে আমরা ১ লাখ ৯০ হাজার শরণার্থী পরিবারকে লিকুইফাইড পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) দিতে পারব। এই পরিচ্ছন্ন জ্বালানি শরণার্থীদের সুস্থতা ও জীবনমান উন্নয়নে কাজ করে এবং এটি বনে লাকড়ি সংগ্রহ করতে গিয়ে লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতা ও অন্যান্য সুরক্ষা ঝুঁকি রোধ করে।
তিনি বলেন, কক্সবাজারের পরিবেশ এবং বাস্তুতন্ত্রের সফল পুনঃবাসন ও উল্লেখযোগ্য হারে কার্বন ডাই অক্সাইডের নিঃসরণ কমানোর মাধ্যমে জলবায়ু সংকটের সম্মুখীন কক্সবাজারের স্থানীয় জনগণের জন্যও এটি সাহায্য করবে।
পাঠকের মতামত