প্রকাশিত: ২২/১২/২০১৬ ৭:৫২ এএম

উখিয়া নিউজ ডেস্ক::

কক্সবাজারের কুতুপালংয়ে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করেছেন ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেতনো মারসুদি। এ সময় তিনি নিজে কথা বলেছেন ক্যাম্পে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সঙ্গে। রোহিঙ্গারা তাকে বলেছেন, কীভাবে তাদের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনী।

 

তাদের কারও কারও হাত-পা ভেঙে দেওয়া হয়েছে, কারও বাড়ি-ঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এসব শরণার্থীদের প্রায় সবাই কোনও না কোনও স্বজনকে হারিয়েছেন। এসব নির্যাতিত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সঙ্গে কথা বলেই ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানতে পেরেছেন কীভাবে মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনীর দ্বারা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন রোহিঙ্গারা।

 

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মাদ শাহরিয়ার আলম বুধবা তার দফতরে সাংবাদিকদের এ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয়েছে তিনি নতুন কিছু দেখেছেন, নতুন কিছু জেনেছেন। তিনি মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের নির্যাতিত হওয়ার প্রকৃত ঘটনা জানতে পেরেছেন।’

 

রোহিঙ্গা বিষয়ে আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের নিয়ে মিয়ানমার এক বৈঠকের আয়োজন করে সোমবার। সেই বৈঠকে যোগ দেন ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেতনো মারসুদি। ওই বৈঠকের পর তিনি মিয়ানমারে স্টেট কাউন্সিলর ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী অং সান সু চি’র সঙ্গে একান্ত বৈঠকও করেন। তারপরই রাতে চলে আসেন বাংলাদেশে। মঙ্গলবার সকালে তিনি একান্ত বৈঠক করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলীর সঙ্গে। এরপর কক্সবাজারের কুতুপালংয়ে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করেন।

 

শাহরিয়ার আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিজে শরণার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। যারা এমনকি ৩-৪ দিন আগে এখানে এসেছেন তাদের সঙ্গেও কথা বলেছেন তিনি।’ প্রতিমন্ত্রী জানান, রেতনো মারসুদি যেসব শরণার্থীর সঙ্গে কথা বলেছেন তাদের অনেকেরই হাত-পা ভেঙে গেছে, কারও বা শরীর পুড়ে গেছে। এসব শরণার্থীদের অনেকেরই কোনও না কোনও স্বজন প্রাণ হারিয়েছেন।

 

শাহরিয়ার আলম আরও বলেন, ‘এ সফরে তিনি (রেতনো মারসুদি) সত্যিকার চিত্র জানতে পেরেছেন। তিনি বুঝতে পেরেছেন মিয়ানমারে কারা এসব শরণার্থীদের ওপর হামলা করেছে, কারা তাদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে।’

 

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী শরণার্থীদের প্রকৃত তথ্য জানার জন্যই এখানে এসেছেন। এটা আমরা বুঝতে পেরেছি। এমন হতে পারে যে তিনি মিয়ানমারের পক্ষ থেকে অন্য ধরনের খবর পেয়েছেন। কিন্তু এখানে এসে নিশ্চয়ই তার সেই ধারণা বদলে গিয়েছে।’ মারসুদির কাছে ‘ফ্যাক্ট’গুলো তুলে ধরা হয়েছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।

 

মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর হামলা ‘এথনিক ক্লিনজিং’ কিনা, সে বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি শাহরিয়ার আলম। তবে তিনি বলেন, ‘আমরা যাদের পেয়েছি তারা সবাই মুসলিম। এমনকি একজন বলেছে তার দাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।’

 

রোহিঙ্গাদের এই সমস্যা মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বা সামাজিক সমস্যা হতে পারে বলে মনে করেন শাহরিয়ার আলম। তিনি বলেন, ‘এটি তাদের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সমস্যা। সামাজিক সামাজিক সমস্যাও হতে পারে। এমন অবস্থায় আভ্যন্তীরণ টেনশন কাজ করে। সেই জায়গায় বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর সুন্দর বোঝাপোড়া উপকারে আসে।’ এই প্রেক্ষিতে ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেন প্রতিমন্ত্রী।

পাঠকের মতামত

আজহারীর পরবর্তী মাহফিল যে স্থানে

সিলেটে যাচ্ছেন জনপ্রিয় ইসলামি বক্তা মিজানুর রহমান আজহারী।আগামীকাল বৃহস্পতিবার আনজুমানে খেদমতে কুরআন আয়োজিত ৩৬তম তাফসিরুল ...