কক্সবাজার থেকে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরু করতে চীন ভালো উদ্যোগ নিয়েছে। প্রত্যাবাসন নিয়ে বেইজিং কাজ করছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
চলতি মাসের শুরুর দিকে ঢাকা সফর করে গেছেন চীনের বিশেষ দূত দেং শিজুন। এ সফরে ড. মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করেন দেং শিজুন।
বৈঠকের বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের কীভাবে তাড়াতাড়ি ফেরত পাঠানো যায়, তা নিয়ে আলাপ হয়েছে। আমরা সবসময় আশাবাদী, রোহিঙ্গারা তাদের দেশে ফেরত যাবে, সম্মানের সঙ্গে ফেরত যাবে।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে চীনের বিশেষ দূতের কোনো পরামর্শ ছিল কি-না, জানতে চাইলে আব্দুল মোমেন বলেন, চীন কাজ করছে অনেকদিন ধরে। শুধু চীন না, অনেকেই কাজ করছে। চীন ভালো উদ্যোগ নিয়েছে এবং তা নিয়ে তারা কাজ করছে।
আমাদের বিশ্বাস তারা মিয়ানমার এবং বাংলাদেশের মধ্যে আলোচনার সুযোগ করে দেবে।
শিগগিরই রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরু হচ্ছে কি-না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, সেটা আমি বলতে পারব না। না হওয়া পর্যন্ত বলা যায় না। দুই-দুইবার আমরা দিন তারিখ ঠিক করার পর প্রত্যাবাসন শুরু হয়নি।
চীনের বিশেষ দূত মিয়ানমার গিয়েছেন, বাংলাদেশও সফর করে গেছেন। তাহলে বেইজিং কোনো সিদ্ধান্ত নিচ্ছে কি-না, জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, আমি জানি না। আমরা আশা করি, রোহিঙ্গারা যত তাড়াতাড়ি যাবে, আমরা তত খুশি।
চলতি মাসের ৬ তারিখ ঢাকা সফরে আসেন চীনের বিশেষ দূত দেং শিজুন। ঢাকায় এসেই তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। চীনের বিশেষ দূতের ফিরতি সফর হিসেবে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন বর্তমানে বেইজিং সফরে রয়েছেন।
সম্প্রতি বাংলাদেশে এসে মিয়ানমারের প্রতিনিধিদল ৪৮০ রোহিঙ্গার যাচাই-বাছাই করে গেছে। আর আগের যাচাই করা রয়েছে ৭৫০ জন। এক হাজার ২৩০ জন রোহিঙ্গা দিয়ে পাইলট প্রকল্পের মাধ্যমে প্রত্যাবাসন শুরু করতে চায় মিয়ানমার।
২০১৭ সালের নভেম্বরে প্রত্যাবাসন বিষয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে চুক্তি সই করে বাংলাদেশ। ২০১৮ সালের নভেম্বরে মিয়ানমারের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সমঝোতার ভিত্তিতে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু সে উদ্যোগ ব্যর্থ হয়।
পরবর্তী সময়ে চীনের মধ্যস্থতায় ২০১৯ সালের আগস্টে দ্বিতীয় দফায় প্রত্যাবাসন উদ্যোগও ব্যর্থ হয়। প্রায় ছয় বছরেও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে কোনো অগ্রগতি হয়নি।