উখিয়া নিউজ ডটকম::
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চালু করা হয়েছে রেডিও সেবা। এটির মাধ্যমে আশ্রয় শিবিরে থাকা রোহিঙ্গাদের প্রয়োজনীয় তথ্য ও বিনোদনমূলক সংবাদ প্রচার করা হচ্ছে। একটি আঞ্চলিক রেডিও স্টেশনের অংশ হিসেবে কাজ করা এই রেডিওটি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের একমাত্র বিনোদনের উৎস। ‘রেডিও নাফ’ নামের এই এফএমটি রোহিঙ্গাদের মানসিক প্রশান্তির জন্য বেশ কাজেও লাগছে। হাতে লাল রেডিও নিয়ে হাঁটা ১৮ বছর বয়সী এই ছেলেটির নাম আবদুল্লাহ। চোখে স্বপ্ন আর বুকে তথ্য প্রদানের অঙ্গীকার নিয়ে আস্তে আস্তে অগ্রসর হচ্ছেন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের দিকে। এ যেন হাজারো নিপীড়িত মানুষের ভারাক্রান্ত মনে একটু বিনোদনের রং ছিটিয়ে দেওয়ার ছোট্ট একটি আকাক্সক্ষা। আবদুল্লাহ ‘রেডিও নাফ’ নামের একটি রেডিওর জন্য কাজ করেন। যা বাংলাদেশের কুতুপালং শরণার্থী শিবিরে আশ্রিত প্রায় ছয় লাখ শরণার্থীদের সেবা দিচ্ছে। কিন্তু এই শিবিরে সরাসরি বেতার সম্প্রচারের কোনো ব্যবস্থা নেই। তাই আবদুল্লাহ নিজেই সেখানে গিয়ে শরণার্থীদের রেডিও শোনান। সহিংস রোহিঙ্গাদের উদ্বেগের বিষয়ে সাক্ষাৎকার নেন। আবদুল্লাহ বলেন, এই রেডিও স্টেশনে আমার কাজ হচ্ছে, শরণার্থীদের শিবিরে থাকা রোহিঙ্গাদের প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান করা এবং শিবিরে থাকার জন্য দরকারি নির্দেশনা দেওয়া। আমি এখানে অনেক কিছু শিখেছি এবং আমার গোষ্ঠীর লোকদের অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানাতে পেরেছি। আবদুল্লাহ ক্যাম্পের সবাইকে ‘লিসেনার্স শো’ নামের একটি বেতার অনুষ্ঠান শোনান। তার রেকর্ড করা সাক্ষাৎকারগুলো রেডিও নাফের সদর দফতরের, সাপ্তাহিক আয়োজন হিসেবে প্রচারিত হয়। আবদুল্লাহ তার সাক্ষাৎকারে তথ্য-ভিত্তিক সংবাদ তুলে ধরেন। সমস্যার সমাধানে বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
‘রেডিও নাফের’ প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর রাশেদুল হাসান বলেন, ক্যাম্পে প্রায় ১৩ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী আছে। যারা আশ্রয়, স্বাস্থ্য, পানি ও স্যানিটেশনসহ বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছেন। তাই আমরা রোহিঙ্গাদের সমস্যা সমাধানে সাহায্য করার জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি বিকাশের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
ইউএনএইচসিআর তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের কুতুপালং এখন বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবির। সুতরাং, এখানে বসবাসরত মানুষদের তাদের জন্য বরাদ্দকৃত সেবার বিষয়ে জানতে পারাটা খুব কঠিন। কিন্তু আবদুল্লাহ এবং ‘রেডিও নাফের’ কারণে এতো কষ্টের মাঝেও কিছুটা স্বস্তি পাচ্ছে শরনার্থীরা।
পাঠকের মতামত