মন্ত্রীপরিষদ সচিব শফিউল আলম আজ শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩ টার দিকে উখিয়ার কুতুপালং বস্তি এলাকা পরিদর্শণ করেছেন। এসময় তিনি সদ্য মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসে বনভূমির জায়গাতে ঝুঁপড়ি বেঁেধ আশ্রয় নেয়া ঝুঁপড়িতে প্রবেশ করে তাদের জীবনযাপন স্বচক্ষে দেখেন। জানতে চান, কারা ঝুঁপড়ি নির্মাণ করে দিয়েছে, ঝুঁপড়ি নির্মাণকালে কেউ কোন টাকা বা চাঁদা দাবী করেছে কিনা। ছোট্ট পরিসরে নির্মিত এক ঝুঁপড়িতে কয় পরিবার থাকা হয় জানতে চাওয়া হলে রোহিঙ্গারা বলেন, একটি ঝুঁপড়িতে ছেলে মেয়ে স্ত্রীসহ ১০/১২ জন থাকতে হয়। খাওয়া দাওয়া কিভাবে করে জানতে চাইলে রোহিঙ্গারা বলেন, খেয়ে না খেয়ে অভাব অনটনে প্রচন্ড শীতের মধ্যে ছেলে মেয়েদের নিয়ে কষ্ট করে দিনযাপন করতে হচ্ছে। মন্ত্রীপরিষদ সচিব বলেন, করার কিছু নেই। যেভাবে আছেন সেভাবে থাকেন।
এসময় মিয়ানমারের নাগপুরা থেকে আসা সদ্য অনুপ্রবেশকারী নুর মোহাম্মদের ছেলে ছৈয়দ আহমদ সন্তান কোলে মন্ত্রী পরিষদ সচিবের নিকট অভিযোগ করে বলেন, তারা কয়েকটি ঝুঁপড়ি নির্মাণ করেছিল। বনকর্মীরা এসে ওইসব ঝুঁপড়ি ভেঙ্গে দিয়েছে। এসময় মন্ত্রী পরিষদ সচিব তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, বনভূমির জায়গায় থাকতে হলে তাদেরকে অনুনয় বিনয় করে অনুমতি নিতে হবে। তাছাড়া করার কিছুই নেই। যেহেতু তোমরা যেখানে আশ্রয় নিয়েছ পুরো জায়গাটা বনভূমির। বহিরাগত কেউ কোন চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী করতে চাই কিনা মন্ত্রী পরিষদ সচিব জানতে চাইলে রোহিঙ্গা বলেন, এই পর্যন্ত তাদেরকে গ্রামবাসীরা অসহযোগীতা করেনি। উপরোন্তু যার যা সম্ভব তারা সাহায্য করেছে। তারা কেন এদেশে পালিয়ে এসেছে তা জানতে চাইলে রোহিঙ্গারা বলেন, মিয়ানমারের বর্মী সেনা, পুলিশ ও রাখাইন যুবকেরা তাদের ঘরবাড়িতে লুটপাট চালিয়ে যুবতী মেয়েদের ধর্ষণ শেষে আগুন দিয়ে বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়ার কারণে নিরাশ্রয় হয়ে তারা এখানে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছে।
এর আগে মন্ত্রী পরিষদ সচিব কুতুপালং ক্যাম্প ইনচার্জ মিলনায়তনে এনজিও প্রতিনিধি, সরকারি -বেসরকারি কর্মকর্তা, উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সাথে বৈঠক করেন। বৈঠকে ক্যাম্প ইনচার্জ ভিডিও চিত্র প্রদর্শনের মাধ্যমে কুতুপালং বস্তি এবং নিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সার্বিক বাস্তব পরিস্থিতি তুলে ধরেন। এসময় মন্ত্রীপরিষদ সচিব ক্যাম্পের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পায়ুনিস্কাশন ও সুপিয় পানির সরবরাহ সহ বেশ কিছু প্রশ্ন করেন এনজিওদের। এনজিও নেতৃবৃন্দরা প্রতিউত্তরে ভিডিও চিত্রের মাধ্যমে তাদের ধারাবাহিক কার্যক্রম মন্ত্রী পরিষদ সচিবকে অবগত করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন, কক্সবাজার জেলা প্রশাসন মোঃ আলী হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক কাজী আব্দুর রহমান, রোহিঙ্গা ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার এস এম রেজাওয়ান হোছাইন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাঈন উদ্দিন, সহকারি কমিশনার (ভূমি) নুরুদ্দিন মোহাম্মদ শিবলী নোমান, উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবুল খায়ের।