কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে চলছে ‘টার্গেট কিলিং’। ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তার, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধ কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ করতে গ্রুপ নেতাদের হত্যা করা হচ্ছে। গত চার মাসে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে টার্গেট কিলিংয়ের শিকার হয়েছেন ১২ জন। যাদের মধ্যে রোহিঙ্গা নেতা ছাড়াও রয়েছেন ক্যাম্প নিয়ন্ত্রণকারী বিভিন্ন সংগঠনের নেতা।
চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন বলেন, আমাদের কাছে যতটুকু তথ্য রয়েছে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে খুনের ঘটনাগুলো সংঘটিত হচ্ছে। খুনের ঘটনায় জড়িতদের অনেককেই গ্রেফতার করা হচ্ছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এগুলো টার্গেট কিলিং কি না তা আমরা এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত নই। তদন্ত হচ্ছে।
আইন প্রয়োগকারী সংস্থার একাধিক কর্মকর্তা বলেন, এক সময় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ছোট ছোট অপরাধী চক্র আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘাতে জড়াত। এখন তাতে যোগ দিয়েছে বড় অপরাধী চক্র। যার মধ্যে ক্যাম্পে সক্রিয় কয়েকটি জঙ্গি সংগঠনও রয়েছে। তারা একে অপরকে ঘায়েল করতে টার্গেট কিলিংয়ে নেমেছে। গত কয়েক মাসে কয়েকটি হত্যাকাণ্ড পর্যালোচনা করলে বিষয়টা সহজেই অনুমান করা যাবে।
জানা যায়, কক্সবাজারের শরণার্থী ক্যাম্পে ক্যাম্পে চলছে মিয়ানমারভিত্তিক সংগঠনগুলোর তৎপরতা। যার মধ্যে রয়েছে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা), রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও), ইসলামী মাহাজ এবং জমিউয়তুল মুজাহিদীন।
এক সময় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আরসার একক আধিপত্য থাকলেও বর্তমানে তাদের আধিপত্যে হানা দিয়েছে ইসলামী মাহাজ এবং জমিউয়তুল মুজাহিদীন এবং আরএসও। তারা ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তার এবং মাদক, মানব পাচার, অস্ত্র ব্যবসা এবং চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ছে। একে অপরকে ঘায়েল করতে টার্গেট কিলিংয়ে নেমেছে।
শেষ চার মাসে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে টার্গেট কিলিংয়ের শিকার হয়েছেন কমপক্ষে ১২ রোহিঙ্গা নেতা। যার সর্বশেষ শিকার হন ব্লক প্রধান মাঝি আবু তালেব। গত ৯ আগস্ট জামতলী ১৫ নম্বর ক্যাম্পে টার্গেট কিলিংয়ের শিকার হন ক্যাম্প-সি ব্লকের প্রধান মাঝি আবু তালেব এবং সাব মাঝি সৈয়দ হোসেন। এর আগে ৮ আগস্ট নয়াপাড়া ক্যাম্পে প্রতিপক্ষের হাতে খুন হন মো ইব্রাহিম নামে এক রোহিঙ্গা নেতা।
১ আগস্ট একই ক্যাম্পে গুলিবিদ্ধ হন হাবিব উল্লাহ নামে আরেক রোহিঙ্গা নেতা। পরে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। একই দিন মধুছড়া ক্যাম্পে খুন হন নুরুল আমিন নামে এক রোহিঙ্গা নেতা। ২২ জুন খুন হন আরসা নেতা মোহাম্মদ শাহ। ১৬ জুন উখিয়া ক্যাম্পে খুন হন মোহাম্মদ সমিন। ১৫ জুন খুন হন আরসা নেতা মো. সেলিম। ৯ জুন খুন হন রোহিঙ্গা নেতা আজিম উদ্দিন। মে মাসে মাসে খুন হন রোহিঙ্গা নেতা সানা উল্লাহ এবং সোনা মিয়া। সুত্র বিডি-প্রতিদিন