আক্রান্ত ১১৬৫৮ জন
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ডেঙ্গুতে ১ বছরে ২২ জনের মত্যু
জেলায় বেড়েছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। তবে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে। গত এক বছরে ১২ হাজার ২৪৬ ডেঙ্গুর রোগীর মধ্যে ১১ হাজার ৬৫৮ জনই রোহিঙ্গা। এছাড়া এ রোগে মৃত ২৩ জনের মধ্যে ২২ জনই রোহিঙ্গা বলে জানা গেছে। এ পরিস্থিতিতে ডেঙ্গু মোকাবিলায় চিকিৎসার পাশাপাশি প্রতিরোধে বেশি গুরুত্ব দেওয়া কথা বলছেন সংশ্লিষ্টরা।
কক্সবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালে এক দিনেই ভর্তি রয়েছেন ৫২ জন ডেঙ্গু রোগী। আইসিওতে রয়েছে ৩ জন। গত এক মাসে স্কুল শিক্ষার্থীসহ মারা গেছেন পাঁচজন। জেলার সদর হাসপাতাল থেকে পাওয়া তথ্যে এ চিত্র উঠে আসে।
গত কয়েকদিন ধরে স্থানীয়দের মাঝেও বেড়েছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। এতে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও স্বজনরা উদ্বিগ্ন। হাসপাতালে আসা শহরের ১ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আক্তার কামাল জানান, তার এলাকায় ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ বেড়েছে। তার পরিবারেই বেশ কয়েকজন আক্রান্ত হয়েছেন।
কুতুপালং ক্যাম্পের রোহিঙ্গা যুবক আব্দুর রহমান জানান, তার স্ত্রী ও সন্তানের গত কয়েকদিন ধরে জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিল। প্রথমে ক্যাম্পের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত তার সন্তান ও স্ত্রীর অবস্থা ভাল নয়।
শহরের সমিতি পাড়ার মোবারেকা বেগম জানান, তার ৮ বছরের সন্তান ফরহাদ হোসেন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত ৪ দিন ধরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এখন অবস্থা একটু উন্নত হয়েছে।
কক্সবাজার সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মুহাম্মদ আশিকুর রহমান বলেন, আইসিওতে থাকা তিনজনসহ কক্সবাজার সদর হাসপাতালে একদিনেই (১ সেপ্টেম্বর) রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫২ জনে। এক মাসে স্কুল শিক্ষার্থীসহ মারা গেছে পাঁচজন। হাসপাতালে ন্যাশনাল গাইডলাইন অনুযায়ী ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। মশা বিস্তারের স্থান ধ্বংস করা এবং মশারিসহ নানা প্রতিরোধ ব্যবস্থার মাধ্যমে ভাইরাসজনিত এই রোগ থেকে বাঁচতে সবাইকে সর্তক থাকতে হবে।
এ বিষয়ে জেলার সিভিল সার্জন ডা. মাহবুবুর রহমান বলেন, গত এক বছরে ১২ হাজার ২৪৬ ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে ১১ হাজার ৬৫৮ জনই হল রোহিঙ্গা। বাকী ৫৮৮ জন স্থানীয়। সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৭১২ জনে মারা যাওয়া ২৩ জনের মধ্যে ২২ জনই হল রোহিঙ্গা। বাকী একজন স্থানীয়।
তিনি আরও বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে চিকিৎসার পাশাপাশি সচেতনতামূলক প্রচারণা চলছে স্থানীয় ও রোহিঙ্গাদের মাঝে। উখিয়া-টেকনাফের ৩৪টি ক্যাম্পেই ডেঙ্গু চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা হয়েছে। সরকারের পাশাপাশি এনজিও-আইএনজিওগুলো কাজ করছে। চিকিৎসার সঙ্গে প্রতিরোধকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে চিকিৎসার পাশাপাশি সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টদের এগিয়ে আসার কথা বলছেন সচেতন মহল।
পাঠকের মতামত