উখিয়া নিউজ ডটকম::[caption id="attachment_63015" align="alignleft" width="768"] কুতুপালং বাজারে রোহিঙ্গা ডাক্তার ডিপুর অপেক্ষায় রোগীরা[/caption]
উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পকে কেন্দ্র করে ব্যাঙের ছাতার মতো ওষুধের দোকান ও প্যাথলজির ব্যবসার নামে চলছে অপচিকিৎসা। রোহিঙ্গা বাজারকেন্দ্রিক ওষুধের দোকান খুলে স্থানীয় পরিচয়ে ডাক্তারি চিকিৎসা করছে শত শত রোহিঙ্গা। ক্যাম্প এলাকার অলিতে গলিতে অবৈধভাবে ওষুধের ফার্মেসি খুলে রোহিঙ্গারা নিজেদের বাংলাদেশি হিসেবে ভুয়া পরিচয় দিয়ে চিকিৎসার নামে অবৈধভাবে হাতিয়ে নিচ্ছে হাজার হাজার টাকা। এতে প্রতারিত হয়ে স্বাস্থ্যহানিতে পড়েছে রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি স্থানীয় স্থানীয় লোকজনও।
প্রায় ৭ লাখ রোহিঙ্গাদের টার্গেট করে উখিয়ার ২০টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গড়ে উঠেছে ৫ শতাধিক ফার্মেসি। যেসব ফার্মেসির নেই কোন বৈধতা, নেই ফার্মাসিস্ট। দেদারছে বেচাকেনা হচ্ছে অখ্যাত কোম্পানির তৈরি করা নিম্ন মানের ওষুধ। বিশাল রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ব্যাপক চাহিদাকে কাজে লাগিয়ে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী ক্যাম্পের আনাচে কানাচে ঠাঁই নিয়ে এসব ফার্মেসিগুলোতে চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসা দিচ্ছে। বিভিন্ন এনজিও সংস্থা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এসব ভুয়া রোহিঙ্গা ডাক্তার দীর্ঘ ৭-৮ বছর ধরে কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদ থেকে নামে বেনামে ট্রেড লাইসেন্স ও নাগরিক সনদ নিয়ে এবং অন্যজনের নামে থাকা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চিকিৎসকের ডিপ্লোমা সনদ এলএমএএফ, ডিএমএডি, এমএফ, আরএমপি সনদ নিজেদের নামে বানিয়ে চিকিৎসা নামে এই মহা মানবসেবা মূলক পেশাকে কলংকিত করছে এমন অভিযোগ উঠেছে সচেতন মহলের পক্ষ থেকে।
এসব ভুয়া ডাক্তার অনুমান করে ও মনগড়া ওষুধ লিখে রোগীদের হাতে চিকিৎসাপত্র তুলে দিয়ে থাকে এবং বিভিন্ন নিম্নমানের ওষুধ ধরিয়ে দিচ্ছে হাজার হাজার রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ, শিশুসহ এলাকার মানুষের হাতে। এসব অপচিকিৎসার ফলে বেশ ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে নিরীহ অসচেতন লোকজন।
সদ্য বদলী হয়ে যাওয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাঈন উদ্দিন এ উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ জনপদ কোটবাজার এলাকায় দুটি প্রাইভেট হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে অদক্ষ নার্স ও আয়া দ্বারা চিকিৎসা দেওয়ার অপরাধে ৩ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করেন। এরপর পর উখিয়ার বেশ কয়েকটি নামীদামী হাসপাতাল ও ক্লিনিক কিছু দিনের জন্য বন্ধ থাকে।
ইউএনও এসময় কুতুপালং ক্যাম্পে বেশ কয়েকবার অভিযান চালিয়ে ফার্মেসির বৈধতা ও ফার্মাসিস্ট না থাকার ইস্যু নিয়ে বেশ কয়েকজন ফার্মেসি মালিককে জেল জরিমানা করেন। তারপরেও তাদের অবৈধ বাণিজ্য থামেনি।
রোহিঙ্গা মাঝি আয়ুবুল্লাহ জানান, তাদের অপচিকিৎসার কারণে অনেক রোহিঙ্গা রোগীর অবস্থা চরম অবনতি হয়েছে। অনেকেই মারা গেছে।
উখিয়া ফার্মেসি মালিক সমিতির সভাপতি ডা. আব্দুল জব্বার জানান, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যেসব ফার্মেসি গড়ে উঠেছে ওইসব ফার্মেসিতে তল্লাসি চালালে একটি দোকানেরও বৈধতা পাওয়া যাবে না।
তাজনিমারখোলা রেডক্রিসেন্ট পরিচালিত চিকিৎসা সেবা কেন্দ্রের প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত নার্স ছেনুয়ারা জানান, রোহিঙ্গারা ফার্মেসির অবৈধ চিকিৎসা নিয়ে যখন তাদের অবনতি হয়, তখন ওইসব রোগীরা তাদের দ্বারস্থ হন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান জানান, এসব প্রাইভেট হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান চালানোর প্রক্রিয়া চলছে।